ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে পশুরহাটে রোহিঙ্গাদের প্রভাব

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২০ আগস্ট ২০১৮

কক্সবাজারে পশুরহাটে রোহিঙ্গাদের প্রভাব

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় গ্রহণকারী লাখ লাখ রোহিঙ্গার কারণে প্রভাব পড়েছে কোরবানি গরুর হাটে। উখিয়া টেকনাফে অনুপ্রবেশকারী ও আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে গরু সরবরাহের জন্য এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থা স্থানীয় গরুর হাট থেকে গত তিনদিন ধরে গরু কিনছে। দামাদামী না করে বিক্রেতা যা বলছে, তা দিয়ে গরু তারা ক্রয় করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় হতদরিদ্রদের স্বল্প দামে গরু কেনা মুশকিল হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিবছর উখিয়া ও টেকনাফে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার পশু কোরবানি দেয়া হয়। এবার প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার, দেশী -বিদেশী দাতা গোষ্ঠী, এনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের মাঝে কোরবানির মাংস সরবরাহের জন্য অন্তত ১৫হাজার পশু ক্রয় করছে। এ কারণে উখিয়া টেকনাফে পশুর দাম একটু বেড়ে গেছে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে তারা এটাও বলেন যে, বড় সাইজের গরুর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি সাইজের গরু কিনতে বিভিন্ন সংস্থার লোকজন কোন ধরনের দর কষাকষি করছে না। এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য গরু কিনতে উখিয়া টেকনাফের ১৩টি পশুর বাজারে ভিড় করেছে। জনপ্রতিনিধিরা বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মাঝারি সাইজের গরু কেনার কারণে বিপাকে পড়েছে কোরবানিদাতা তথা স্থানীয় পশু ক্রেতারা। . কুড়িগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম থেকে জানান, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। কুড়িগ্রামে বিভিন্ন পশুর হাট জমে উঠেছে। যাত্রবাড়ী, কাঁঠালবাড়ী, উলিপুর নাগেশ^রী,ভুরুঙ্গামারী ও রৌমারী বাজারের গরুর হাটে বিভিন্ন জাতের গরু-ছাগলে ভরপুর। তিল ধারণের জায়গা নেই। শত শত গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা পছন্দের গরু খুঁজছেন কম দামে কিনতে। কেনাবেচা কম হলেও ঘাটতি নেই ক্রেতা-বিক্রেতার। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অভিযোগ, হাট ইজারদাররা গরু দাঁড়ানোর জায়গা ঠিকমতো না করায় তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলার পুলিশ প্রশাসন গরুর হাটে পুলিশী টহল জোরদার করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম জানান ঈদ উপলক্ষে সব ধরনের অরাজকতা ঠেকাতে হাট-বাজারগুলোতে পুলিশ মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া হাটগুলোতে জাল টাকা ধরার জন্য পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় মেশিন বসিয়ে সহায়তা করছে। পাশাপাশি বিভিন্নস্থান ও নদী পথে পুলিশী টহল বাড়ানো হয়েছে। উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের রব্বানী নামের এক ক্রেতা জানান হাটে গরুর দাম একটু বেশি। যে টাকা নিয়ে আসছি তাতে গরু কেনার বাজেট ফেল হয়েছে। তবে হাটে আসা গরু বিক্রেতা মাজেদুল জানান একটা গরু পালন করতে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, সে টাকাই উঠছে না। এ রকম চলতে থাকলে আগামীতে এ এলাকার মানুষ গরু পালন করা ছেড়ে দেবেন। তবে অনেক বিক্রেতার আশা, শেষ মুহূর্তের হাটগুলোতে তারা কাক্সিক্ষত দাম পাবেন। জেলার ছোট-বড় সব হাটে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা জমে উঠবে। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড উলিপুর শাখার এসপিও ম্যানেজার নিরঞ্জন চন্দ্র রায় বলেন, গরুহাটে যাতে কেউ প্রতারিত না হয় সেজন্য আমরা মানি ডিটেক্টর মেশিন দিয়ে জাল নোট শনাক্ত করার কাজ করছি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ প্রধান জানান, হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ নিষিদ্ধ কোন ওষুধ ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ করা গরু যাতে বিক্রি করতে না পারে সেজন্য আমাদের মেডিক্যাল টিম সর্বক্ষণিক কাজ করছে। . কালকিনি নিজস্ব সংবাদদাতা কালকিনি, মাদারীপুর থেকে জানান, কালকিনি উপজেলা সদর ও গোপালপুরসহ প্রায় ৩০টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা এই মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে। কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এবারের কোরবানির জন্য গরু-মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় আমদানি অনেক কম হচ্ছে হাটগুলোতে। ফলে গত বছরের তুলনায় এবারে কোরবানির জন্য পশুর দাম অনেক বেশি। তাই পশু কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে এ উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাটে ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে। প্রতিটি হাটে ৫৫ হাজার থেকে দেড় লাখের বেশি মূল্যের ষাঁড় বেচাকেনা হচ্ছে। . মাগুরা নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কোরবানির পশুরহাট। বেড়েছে গরু, ছাগলের বেচাকেনা। পশুর আমদানি ভাল হওয়ায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ইটখোলা, রামনগর, কাটাখালী, আলমখালী, আলোকদিয়া, বেথুলিয়া, নহাটা, আড়পাড়া, সীমাখালী, লাঙ্গলবাধ প্রভৃতি স্থানে কোরবানির পশুরহাট বসেছে। বিভিন্ন আকারের গরু ও ছাগল উঠেছে বিক্রির জন্য। কোরবানি দিতে ইচ্ছুক ক্রেতারা হাটের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে-ফিরছেন সাধ্যের মধ্যে তাদের পছন্দের ছাগল ও গরুটি কেনার জন্য। ক্রেতারা অপেক্ষা করছেন শেষ মুহূর্তের জন্য। যাতে কিছুটা কম দামে পছন্দের পশুটি পাওয়া যায়। . রাজশাহীতে ছাগলের দাম কম স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, শেষ সময়ে এসে জমে উঠেছে রাজশাহী অঞ্চলের কোরবানির পশুর হাট। রাজশাহীর পশু হাটগুলোতে এবার গরুর দাম কিছুটা বেশি। তবে ভিন্ন চিত্র ছাগলের ক্ষেত্রে। হাটে এবার দেশী ছাগলের দাম গত বছরের চেয়ে কম। ছাগল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এবার বেশি সংখ্যায় ছাগল পালন হয়েছে। তাই দামও কিছুটা কম। রাজশাহীর নওহাটা হাট এখন ছাগলে ভরপুর। হাটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশী ছাগলই বেশি। মাঝারি আকারের ছাগলগুলো ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এ ধরনের ছাগল গত কোরবানি ঈদে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সানোয়ার আলী নামে এক ছাগল ব্যবসায়ী জানান, তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছাগল কেনেন। এবার গ্রাম-গঞ্জে প্রচুর ছাগল রয়েছে। সে জন্য কিছুটা কম দামেই তিনি ছাগল কিনতে পেরেছেন। এসব ছাগল তিনি হাটে এনে বিক্রি করছেন। হাটে সর্বনিম্ন ৬ হাজার টাকায় ছাগল বিক্রি হচ্ছে। ১২ থেকে ১৫ কেজি মাংস হবে এসব ছাগলের। গাজলু শেখ নামে আরেক ছাগল ব্যবসায়ী জানান, এবার মাঝারি আকারের ছাগলগুলোরই চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বড় ছাগলগুলোর দাম কিছুটা বেশি। ১৮ থেকে ২৫ কেজি মাংস হতে পারে এমন ছাগলের দাম ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে ছোট-বড় সব ছাগলের দামই গত বছরের চেয়ে কম।
×