স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ৬ মাসের জামিন বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে আপীল বিভাগ। জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চ এই ‘নো অর্ডার’ প্রদান করেন। এই আদেশের ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ৬ মাসের জামিন বহাল রইল বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ করে এ বিষয়ে আদেশের জন্য রবিবার দিন ধার্য করেছিল সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। এর আগে গত ৭ আগস্ট চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। তার আগে গত ৬ আগস্ট বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। রাষ্ট্রপক্ষ সেই জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপীল বিভাগে আবেদন জানালেও এ বিষয়ে তারা কোন আদেশ দেননি। ফলে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বহাল থাকছে। এছাড়াও এর আগে এ মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। সেই আবেদন এখন শুনানি অবস্থায় রয়েছে।
খালেদার আইনজীবী এহসানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে জামিন আবেদন শুনানির জন্য বেশ কয়েকবার দিন ধার্য করেন কুমিল্লার আদালত। কিন্তু বারবার দিন নির্ধারণ করায় গত ২৩ জুলাই খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদন ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিল। পরে এ মামলায় গত ২৫ জুলাই কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ কেএম সামছুল আলম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপীল এবং জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেয়ে গত ৬ আগস্ট হাইকোর্ট এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। রবিবার আপীল বিভাগের নো-অর্ডারের ফলে তার জামিন বহাল রইল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় হুকুমের আসামি করে হত্যা মামলার পাশাপাশি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় রূপান্তর করা হয়। এই মামলায় জামিন চেয়ে গত ১ জুলাই কুমিল্লার দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই দিন বিচারক কে এম শামছুল আলমের বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তার জামিন আবেদনটি ৮ আগস্ট শুনানির জন্য রাখেন। উল্লেখ্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দ- হওয়ার পর থেকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন খালেদা জিয়া।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: