ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে কাদের

শাহবাগ ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় হামলায় ছাত্রদল শিবির জড়িত

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৭ আগস্ট ২০১৮

শাহবাগ ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় হামলায় ছাত্রদল শিবির জড়িত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন এবং ওই আন্দোলন থেকে উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবং শিক্ষকদের কথা শুনে শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তিসঙ্গত আন্দোলন শেষ করে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ঘরে ফিরে গেছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন এবং ওই আন্দোলন থেকে উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে। সোমবার বিকেলে ধানম-িস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে কোন আন্দোলনকারী রাস্তায় নেই। আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকেছে। তারা রাস্তায় আছে। তারাও বিতাড়িত হবে। ধানম-ি ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় হামলার জন্য আবারও বিএনপিকে দায়ী করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন তখনই প্রমাণ হয়েছে শিক্ষার্থীদের এই অরাজনৈতিক আন্দোলনের ওপর ভর করে তারা রাজনৈতিক নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। এই আন্দোলনকে তারা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ দিতে চেয়েছে। এটা এখন ক্রিস্টাল ক্লিয়ার (স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ)। শাহবাগ ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় হামলার সঙ্গে ছাত্রদল ও জামায়াত শিবির জড়িত দাবি করে তিনি বলেন, এসব হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত প্রমাণ দিতে পারলে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তালিকাসহ আমি বিচার করব। একটি ছবি দেখিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রবিবারের যে আন্দোলন, এটা ছাত্রছাত্রীদের ছিল না। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আহ্বানটি সারাদেশে তারা সিক্রেটলি প্রচার করেছে। এ কারণে সারাদেশ থেকে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা ঢাকায় আসে। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে গতি পাচ্ছে না, তারা ঘরে ফিরে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে তাদের ক্যাডাররা অস্ত্র নিয়ে শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত, সায়েন্স ল্যাব থেকে বিজিবি গেট পর্যন্ত অতঃপর আওয়ামী লীগ অফিস টার্গেট করে তারা। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি না সাধারণ শিক্ষার্থীরা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা করার কোন এজেন্ডাও নেই। এই এজেন্ডা তাদের, যারা এই আন্দোলনের ওপর ভর করে রাজনৈতিক দাবা খেলায় মেতে উঠেছে। আন্দোলন চলাকালীন সাংবাদিকদের ওপর হামলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা যদি কোন ছাত্রলীগকর্মী করে থাকেন, এর প্রমাণ দিন। তালিকাসহ আমি বিচার করব। আপনারাই বলুন ছাত্রলীগের কারা কারা জড়িত? আমাকে তালিকা দিন। এ ধরনের হামলায় ওই লোকগুলো (অনুপ্রবেশকারী) তো জড়িত থাকতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নকে গতিশীল করতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ক্রাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী শনিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশের বিআরটিএ প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ির ফিটনেস প্রদান-নবায়ন, লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন কার্যক্রম প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এই কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনটি আরও দুটি ধাপ পেরিয়ে জাতীয় সংসদে পাস হবে। সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত হবে সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হবে। সকল স্টেকহোল্ডার ও সকলের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি জাতীয় সংসদে পাস করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×