ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রুশ অবস্থান সমর্থন ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৮ জুলাই ২০১৮

রুশ অবস্থান সমর্থন ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার আশা প্রকাশ করেন। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ নিয়ে তার বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিবিসি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অগ্রাহ্য করে ট্রাম্প বলেন ওই নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কোন কারণ নেই। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি কি নিজ দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বক্তব্য সঠিক মনে করেন নাকি রুশ প্রেসিডেন্টের। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রাশিয়া এটি করেনি। আর রাশিয়ার এটি করার কোন কারণ আমি দেখি না। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার রিপাবলিকান দলের পল রায়ান বলেছেন, ‘ট্রাম্পের এটি অবশ্যই উপলব্ধি করা প্রয়োজন যে রাশিয়া আমাদের মিত্র নয়। তিনি বলেন, মূল্যবোধের দিক দিয়ে রাশিয়া কখনও যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ নয়। তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ ও আদর্শের প্রতি শত্রুতামূলক দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করে।’ সিনিয়র রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন একে ‘বাজে পারফরমেন্স’ বলে মন্তব্য করেছেন। পুতিন নিজেও হস্তক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ‘ভালো বিষয়, খারাপ নয়’ এবং বিশ্বও সেটিই চায় উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি দু’দেশের মধ্যে একটি ‘অসাধারণ সম্পর্ক’ চান। এর আগে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে অবনতির জন্য পূর্বসূরী নেতৃবৃন্দের বোকামিকে দায়ী করেছিলেন। সোমবার সকালে তিনি এ বিষয়ে টুইট করেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি সেটি পুনরাবৃত্তি করেন। তার মতে এর জন্য রুশ নেতৃবৃন্দ দায়ী নয়। ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ মস্কোর দখল করে নেয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়লাভে ক্রেমলিনের সহায়তার অভিযোগ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র নতুন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে দুই নেতা বৈঠকে বসেন। সংবাদ সম্মেলন করার আগে ট্রাম্প ও পুতিন প্রায় দু’ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে ১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল। রুশ সরকারের সমর্থনে ট্রাম্পের সমর্থনে এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিপক্ষে সাইবার প্রচারণা চালানো হয়েছিল। পুতিনকে ট্রাম্প বলেছেন, ‘গত কয়েকবছর ধরে আমরা দু’দেশ স্বতস্ফূর্তভাবে একে অপরের সঙ্গে ভাল করে হাত মিলিয়ে চলতে পারছি না। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা একটি অসাধারণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব বলেই মনে হয়।’ ক্রেমলিনও এ বৈঠককে মস্কো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের পথে প্রথম ধাপ হিসেবেই প্রত্যক্ষ করেছে। বৈঠকের পর আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ এবং ভালভাবে শেষ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। তবে পুতিন বলেছেন, ‘অনেক সমস্যাই রয়ে গেছে। আমরা সব বাধা দূর করতে পারিনি... কিন্তু আমি মনে করি এ পথে আমরা প্রথম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পেরেছি।’ বৈঠকে সিরিয়া থেকে শুরু করে পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টিসহ কোরিয়া উপদ্বীপ এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন পুতিন। তবে ওই নির্বাচনে রাশিয়ার হাত থাকার কথা পুতিন অস্বীকার করেছেন এবং ওই অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে তিনি রাজি বলেও জানিয়েছেন। পুতিন বলেন, ‘শীতল যুদ্ধের যুগ শেষ হয়েছে। এখন আমেরিকা এবং রাশিয়ার একসঙ্গে মিলে সব সমস্যা সমাধান করা উচিত।’
×