ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ৩ জুলাই ২০১৮

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফরিপোর্টার, নীলফামারী ॥ সদর উপজেলার সোনরায় ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতি একই পরিবারের দুই ভাইয়ের হাতে। বড়ভাই আব্দুল মান্নান শাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর ছোট ভাই নুরুল ইসলাম শাহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। অভিযোগ উঠেছে, বড়ভাইয়ের ক্ষমতাসীন দলের দাপটকে কাজে লাগিয়ে ছোট ভাই বিএনপি নেতা এলাকার জয়চন্ডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ফলে সেখানে বিদ্যালয়ের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশ করছে। রবিবার ও সোমবার সকালে এলাকাবাসী ওই বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। এতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সোনারায় সংগলসী উচ্চ বিদ্যালয়, সোনারায় সংগলসী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজের অংশ হিসেবে উপজেলা প্রকৌশল দফতরের তত্ত্বাবধানে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে গত ১৫ এপ্রিলে ৮৭ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল এবং একটি গেট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, এটির বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার শাহ আনোয়ার হোসেন। সেখানে জমি নিয়ে জটিলতার কারনে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অভিযোগ মতে ১৯৩০ সালে ৭৩ শতাংশ জমির ওপর জয়চন্ডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি সরকারী অর্থে উপজেলা প্রকৌশল পিডিপি-৩ প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়ের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২৩ জুন সোনারায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম শাহ দলবল নিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে শ্রমিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের জমির কিছু অংশে বাঁশ, কাঠ ও টিনের বেড়া দিয়ে দখলের চেষ্টা চালায়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শংকর কুমার রায় বলেন, ১৯৩০ সালে লোকাল বোর্ড স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় জয়চন্ডি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ১৯৬৮ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী বিনোদ চন্দ্র অধিকারী, প্রভানন্দ অধিকারী, কুমদ চন্দ্র অধিকারী ও কোনারাম অধিকারী ৭৩ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। ওই সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। তিনি জানান সম্প্রতি বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীরে নির্মাণ কাজ শুরু হলে বিদ্যালয়ের ভোগদখলীয় জমির মধ্যে ৩০ শতক জমি ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট একটি ভুয়া দলিল দেখিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দেন এলাকার নূরুল ইসলাম শাহ। নীলফামারী সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব বাবু বলেন, সোনারায় ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি নূরুল ইসলাম শাহ। তার বড়ভাই আব্দুল মান্নান শাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। বড় ভাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও জমি দখলে চেষ্টা করছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূরুল ইসলাম শাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিদ্যালয়ের জমি দখল করিনি। ৬২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী জমি মালিকের ওয়ারিশদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের পেছন দিকের ৩০ শতাংশ জমি আমি কিনেছি। আমার কেনা ওই জমিতে জোরপূর্বক দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, সহকারী জজ নীলফামারী আদালতের স্মরণাপন্ন হলে আদালত গত ২৭ জুন নির্মাণ কাজ বন্ধের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং ২৫ জুলাই মামলা শুনানির দিন ধার্য করেন।
×