ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৮ জুনের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ ॥ নতুন তারিখ রবিবার

গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের আদেশ বাতিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১১ মে ২০১৮

গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের আদেশ বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিতের আদেশ বাতিল করে আগামী ২৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে আপীল বিভাগ। ফলে এই সিটিতে ভোটের বাধা কেটেছে। বৃহস্পতিবার ভোট স্থগিতের বিরুদ্ধে করা আপীলের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বিভাগ এই রায় দেন। বেঞ্চে অন্য বিচারপতিগণ হলেনÑ বিচারপতি ঈমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মীর্জা হোসাইন হায়দার। এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী রবিবার এই সিটিতে ভোটের জন্য দিনক্ষণ পুনরায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী রবিবার কমিশন সভা করে ঠিক করবে কবে নির্বাচন হবে এই সিটিতে। আগামী ১৫ মে খুলনার সঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট হওয়ার কথা ছিল। সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল হক সুরুজের এক রিট আবেদনে গত ৬ মে ভোট তিন মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। সুরুজের দাবি তার ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে পড়েছে। এবং এতে ওই মৌজার ভোটাররা দুই এলাকার ভোটার হয়ে গেছে। তবে সুরুজের আপত্তির বিষয়টি নিয়ে পরে নানা দুর্বলতা বের হয়ে আসে। ওই নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন। চেম্বার বিচারপতি আবেদন দুটি শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে। বুধবার সেই শুনানিতে হাজির হয়ে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীও হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করার কথা জানালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগ তিন আবেদন একসঙ্গে শোনার জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখে। রিটকারী এম আজহারুল ইসলাম সুরুজের পক্ষে বৃহস্পতিবার আপীল বিভাগে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোঃ ওবায়দুর রহমান মোস্তফা। দুই প্রার্থীর মধ্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন। আর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানি করেন এএম আমিন উদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম বাবুল। সকাল সোয়া ১০টায় শুনানি শুরুর পর মাঝে আধা ঘণ্টার বিরতি দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুনানি চলে। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, ১৫ মে নির্বাচনর জন্য ব্যালট পেপার ছাপার কাজও শেষে করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু স্থগিতাদেশের কারণে ১৫ মে ভোট করা এখন আর সম্ভব না। তবে আদালত যে নির্দেশনা দেবে তা পালন করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত। সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদেশ দেয়ার আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একটা রং ইম্প্রেশন তৈরি হয়েছে যে চীফ জাস্টিসই সব করেন। কিন্তু চীফ জাস্টিস মূলত আদেশটি ঘোষণা করেন। এখানে সব বিচারকেরই বিচারিক ক্ষমতা সমান।’ পরে বিচারকরা উঠে খাস কামরায় গিয়ে গাজীপুরের নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তারপর ফিরে এসে ১২টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি রায় ঘোষণা করেন। নির্বাচন আয়োজনে আপীল বিভাগের নির্দেশের পরই বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিবকে নিয়ে বৈঠক করেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা। পরে ইসি সচিব কমিশনের অবস্থান সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গাজীপুরে ২৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। ১৫ মে যেহেতু গাজীপুরে নির্বাচন হচ্ছে না, সেহেতু কবে, কয়দিন সময় দেয়া হবে তা নিয়ে কমিশন ১৩ মে বৈঠকে বসবে। ওই কমিশন সভায় গাজীপুরের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তবে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নতুন দিন তারিখ না জানালেও জানা গেছে রোজার মধ্যে এ সিটির নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা নেই। রোজার পরে সুবিধামতো সময়ে এই সিটি নির্বাচনের দিন তারিখখ ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
×