ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড্ডায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষে গোলাগুলিতে নিহত ১

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

বাড্ডায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষে গোলাগুলিতে নিহত ১

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকার বেরাইদে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। রবিবার বিকেলে এই ইউনিয়নে গোলাগুলি ঘটে বলে বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় সাংসদ রহমতউল্লাহ পক্ষের লোকজনের গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম কামরুজ্জামান দুদু (৩৫)। তার লাশ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরও ৮ জন ওই হাসপাতালে রয়েছেন বলে জানান ওসি। প্রত্যক্ষদর্র্শীরা জানান, গতকাল বিকেলে কামরুজ্জামান দুদু বালু সাপ্লাইয়ের কাজ দেখভাল করার জন্য বালু নদীর তীরে ক্রাউন সিমেন্ট ফ্যাক্টরির কাছে যান। এ সময় তার ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন চড়াও হয়। পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঠা-া লড়াই ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই সূত্র ধরে গতকাল হঠাৎ দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখা দেয়। এ সময় উভয়পক্ষই গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়। এতে বেশ কজন গুলিবিদ্ধ হয় এবং একজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। নিহত কামরুজ্জামান দুদুর বড় ভাই জাহাঙ্গীর জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে পিস্তল ও শটগান নিয়ে স্থানীয় সাংসদ একেএম রহমতউল্লাহর ভাগ্নে ফারুকের নেতৃত্বে মহসীন, আইউব, কাওসার, মারুফ, মশিউর রহমানসহ বেশ কজন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। এতে দুদুসহ আরও অন্তত ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের সবাইকে এ্যাপোলো হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার দুুদুকে মৃত ঘোষণা করেন। কি কারণে দুদুকে হত্যা করা হলো জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর জনকণ্ঠকে বলেন, সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতউল্লাহর ভাগ্নে ফারুকের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী আমার ভাইয়ের ওপর আজ বিকেলে হামলা চালায়। তারা গুলি করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় যাওয়ার পর আমি কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এজন্য নির্বাচন স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলাম। মামলার রায় আমার পক্ষে হওয়ায় এমপি রহমতউল্লাহ আমার ওপর ক্ষেপে যায়। এজন্য আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা আহতদের এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসি। আসার পথেই আমার ভাই মারা গেছে। আট ভাইয়ের মধ্যে কামরুজ্জামান ছিল সপ্তম। কিছুদিন ধরেই আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিল এমপির সমর্থকরা। আমি ও আমার ভাই এ বিষয়ে বাড্ডা থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলাম।’ তবে অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে এমপি রহমতউল্লাহ বলেন, আমাকে ওসি ফোন করেছিল, আমিও শুনেছি। তবে কে বা কারা মেরেছে, তা পুলিশ বলতে পারবে। আমি মাগরিবের নামাজ পরে নিচে নামলাম। আমার ভাগ্নে ফারুক বাড্ডা থানায় বসা রয়েছে। আমরা কেন মারতে যাব। সে কি বলল, কারা মারল, তা পুলিশ বলতে পারবে। বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, দুদু নামে একজন গোলাগুলিতে মারা গেছেন। ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা অভিযান চালাচ্ছি।
×