ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছিনতাইকারী চক্রের হোতা আনিসসহ আটক ৬

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

ছিনতাইকারী চক্রের হোতা আনিসসহ আটক ৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করত। বিত্তশালীরা ছিল ওদের টার্গেট। রাজধানীর বিমানবন্দর, রেলস্টেশন ও বাসস্টপেজে অবস্থান নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ভাল বেশভূষা ও অবস্থা সম্পন্নদের টার্গেট করত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের হাতে আটক ছয় ছিনতাইকারী সম্পর্কে র‌্যাব মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহসুদ খান এসব কথা জানান। তিনি জানান, বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীর রূপনগর ও সাভার সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ধারী সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করে র‌্যাব-১। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, আনিসুর রহমান (৩০), আরিফুল ইসলাম (৩৮), খালেদুল ইসলাম বাপ্পি (৩৫) এবং সাভার হিমান্দীপুর এলাকার আব্দুর রহমান (৪২), জানু মিয়া (৫০) ও শাহজাহান (৫০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশী পিস্তল ও দুটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ খান জানান, চক্রটি অনেক সময় খোঁজ-খবর নিয়ে বিত্তশালীদের টার্গেট করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাদের ধরে নিয়ে ছিনতাই করত। এই চক্রের মূলহোতা আনিসুর রহমান। সে প্রায় সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে মাসোয়ারাও আদায় করত। এ জন্য নকল আইডি কার্ড, ওয়াকিটকি সেটও সঙ্গে থাকত তার। গোপন খবরের ভিত্তিতে রূপনগর আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়। এরপর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে সাভারের হিমান্দীপুর এলাকা থেকে আরও তিন সদস্যকে আটক করা হয়। তারা অস্ত্র নিয়ে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। র‌্যাব কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, আনিসুর রহমান পেশায় প্রাইভেটকার চালক। সে এই ছিনতাই চক্রের মূলহোতা। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি নিজেই চালাত। ২০০৯ সালে রহমত নামে একজনের কাছ থেকে সে ছিনতাইয়ের কাজ শেখে। আরিফুল ইসলাম প্রথমে গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। পরবর্তীতে সে প্রাইভেটকার চালানো শেখে। ছিনতাইকাজে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৪ সালেও রাঙ্গামাটিতে ছিনতাই করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয় সে। মুফতি মাহমুদ খান জানান, চক্রের অন্য সদস্য খালেদুল ইসলাম বাপ্পির আগে জুয়েলারি ব্যবসায়ী ছিল। সে ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ছিনতাই করা স্বর্ণালঙ্কার স্বল্পমূল্যে কিনত। সেগুলো দিয়ে নতুন অলঙ্কার তৈরি করত। আসামি শাহজাহান মিয়া সাভারে থাই গ্লাস ও এ্যালুমিনিয়াম পাইপের ব্যবসা করত। ২০০৮ সাল থেকে সে ছিনতাই শুরু করে। পরে সেই অর্থ দিয়ে ব্যবসা শুরু করে। জানু মিয়া ২০০৯ সাল থেকে যাত্রাবাড়ীতে হালিম বিক্রি ও পরে ২০১৬ সালে সাভারে গিয়ে সাইট লেবারের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ছিনতাই কাজে অংশ নেয়। তিনি জানান, এই ছিনতাই চক্রের সদস্যরা প্রাইভেটকারের যাত্রীদের পরিবহনের নামে নির্জন জায়গাতে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নিত।
×