ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুরুতেই হোঁচট মোশাররফের জাগোবাংলা

প্রকাশিত: ০৭:১১, ২৯ মার্চ ২০১৮

শুরুতেই হোঁচট মোশাররফের জাগোবাংলা

মোশাররফ করিম বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। দীর্ঘ দিন ধরে বিরতিহীন ভাবে অভিনয় করছেন এই অভিনেতা। তিনি বাংলাদেশের অভিনড জগতের এক উজ্বল মুখ। বাংলা নাটকের নতুন দ্বারা সৃষ্টি করেন তার অভিনয়ের প্রতিভার মাধ্যমে। তিনি সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে সমান পরিচিত তার অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা, উচ্চারন দক্ষতার জন্য। মোশাররফ করিম তার নামই এক প্রকার বিশেষণ। টিভি নাটকে তাকে জীবন্ত কিংবদন্তী বললেও ভুল হবে না। অভিনয়ের ভিন্নতা, বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষার উচ্চারন দক্ষতা এবং সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে আমাদের আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। তিনি অনেক পুরস্কার বিজেতা। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে যার জনপ্রিয়তা আকাশছুঁই। অথচ উপস্থাপনায় পা রেখেই পড়লেন তুমুল সমালোচনার মুখে! অথচ সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই ‘জাগো বাংলাদেশ’ নামের অনুষ্ঠানটি শুরু করেন তিনি। যার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার আহ্বান জানাতে গিয়ে উল্টো নিজেই এখন সমস্যার মুখে পতিত। সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার আহ্বান জানাতে গিয়ে উল্টো নিজেই সমস্যার মুখোমুখি হলেন ছোট ও বড় পর্দার তারকা মোশাররফ করিম। তোপের মুখে পড়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে মোশাররফ করিম দুঃখ প্রকাশ করার বিষয়টি ভক্তদের কাছে পরিষ্কার করেন। সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে নির্মিত ‘জাগো বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন মোশাররফ করিম। তবে অনুষ্ঠানটিকে শুধু উপস্থাপনা নয়, নিজের সামাজিক দায়িত্ব মনে করছেন এই অভিনেতা। তা না হলে নাকি অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘টেডএক্স’ ও ভারতের ‘সত্যমেভ জয়তে’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে প্রচারিত হচ্ছে ‘জাগো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানটি। প্রাথমিক ভাবে অনুষ্ঠানটির ১৩ পর্ব ধারণ করা হয়েছে। যেসব বিষয় নিয়ে পর্বগুলো নির্মিত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বাল্যবিবাহ, সড়ক দুর্ঘটনা, অটিজম, যানজট, মেয়েদের ঋতুকালীন সমস্যা, শিশু ধর্ষণ, বৃহন্নলা ও পরিবেশ দূষণ। ১১ মার্চ থেকে সপ্তাহের প্রতি রোববার রাত সাড়ে আটটায় চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে দেখানো হচ্ছে অনুষ্ঠানটি। ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্ব প্রচারের পর তোপের মুখে পড়েন মোশাররফ করিম। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘একটা মেয়ে তাঁর পছন্দ মতো পোশাক পরবে না? আচ্ছা পোশাক পরলেই যদি প্রবলেম হয়, তাহলে সাত বছরের মেয়েটির ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেব, যে বেরাকা পরেছিলেন তাঁর ক্ষেত্রে কী যুক্তি দেব? কোনো যুক্তি আছে?’ এটি প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোশাররফ করিমকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে মোশাররফ করিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব, আগে পুরো অনুষ্ঠান দেখুন। যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা হয়তো পুরো অনুষ্ঠানটি দেখেননি। পুরো বক্তব্য না বুঝেই দোষারোপ করছেন।’ আমি যা নই, তা বলা হচ্ছে। অনেকে আবার মোশাররফ করিমের এ বক্তব্যকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে মনে করছেন। আর তাতে মর্মাহত জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তাই ভক্তদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে আমার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের একটি অংশে আমার কথায় অনেকে আহত হয়েছেন। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমি যা বলতে চেয়েছি, তা হয়তো পরিষ্কার হয়নি। আমি পোশাকের শালীনতায় বিশ্বাসী এবং তার প্রয়োজন আছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা আমার অভিপ্রায় না। এ ভুল অনিচ্ছাকৃত। আমি দুঃখিত। দয়া করে সবাই ক্ষমা করবেন।’
×