ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ঢাকায়

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৮ মার্চ ২০১৮

ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ঢাকায়

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকা এসেছেন। তিনি আজ বুধবার বে অব বেঙ্গল ইনিসিয়েটিভ মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল এ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনভুক্ত (বিমসটেক) দেশগুলোর দ্বিতীয় নিরাপত্তা বৈঠকে যোগ দেবেন। সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন অজিত দোভাল। আজ বুধবার সমুদ্র নিরাপত্তাসহ দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক সুরক্ষা সহযোগিতার বিষয় নিয়ে বিমসটেক দেশগুলোর দ্বিতীয় নিরাপত্তা বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। বিমসটেকের নিরাপত্তা প্রধানদের প্রথম বৈঠকটি গত বছরের ২১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা, সমন্বয়ের উন্নতি ও সক্ষমতা বাড়িয়ে সহিংস চরমপন্থা ও মৌলবাদের বিস্তার রোধে জোটবদ্ধভাবে জরুরী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সদস্য দেশগুলো সম্মত হয়। এছাড়া ইন্টারনেট নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি ফোরাম গঠনের মাধ্যমে সহযোগিতা বাড়াতেও ঐকমত্যে পৌঁছায় বিমসটেক জোট। বিমসটেকের বৈঠকের জন্য ঢাকায় এলেও অজিত দোভাল দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমদ সিদ্দিকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঢাকায় এবার হবে বিমসটেক নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক। এর আগে দিল্লীতে প্রথম বৈঠক হয়েছিল। এদিকে অজিত দোভালের বাংলাদেশ সফর নিয়ে সম্প্রতি ভারতের প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এ বছরের শেষে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। রাজনৈতিকভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে ঢাকাও। নয়াদিল্লীও নজর রাখছে পরিস্থিতির ওপর। আগামী ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করবেন পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে। প্রতিবেশী দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অথবা জঙ্গী হামলার মতো ঘটনা না বাড়ে, সেটাই চাইছে ভারত। ভারতীয় গণমাধ্যমটি আরও বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেবে ঢাকা। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করাটা ভারতের কাছেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশকে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিল্লী। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই অজিত দোভালের প্রথম ঢাকা সফর। অবশ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গী হয়ে ২০১৫ সালের জুনে ঢাকায় আসার কথা ছিল তার। কিন্তু ওই সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জিকেল স্ট্রাইকের তত্ত্বাবধানের জন্য ঢাকায় আসেননি অজিত দোভাল। অজিত দোভাল বিমসটেকের সেমিনারে অংশ নিতে আসলেও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠক হবে। উল্লেখ্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট বিমসটেক ১৯৯৭ সালে গঠিত হয়। ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড এ উদ্যোগ নেয়। জোটে পরে যোগ দেয় মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান। সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়ার পাশাপাশি ১৪ সদস্যে দাঁড়িয়েছে এ জোট। ২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এটির প্রধান কার্যালয় স্থাপিত হয়। বিমসটেককে উন্নয়নের বিকল্প হিসেবে কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপের রূপরেখা শুরু করেছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
×