ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী চলছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ২৭ মার্চ ২০১৮

সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী চলছে

সিরিয়ার দেইর আল-জোর প্রদেশের একটি পারমানবিক চুল্লিতে হামলা চালিয়ে ইসরাইল ধ্বংস করে দিয়েছিল এক দশক আগে। কিন্তু এতে দমে যাননি শাসক বাশার আল আসাদ। লেবানন সীমান্তের কাছে তার সরকার আরেকটি চুল্লি তৈরি করছে। সিরিয়ার বিরোধী সূত্রগুলোর বরাতে ব্রিটেনভিত্তিক আরবী ভাষী পত্রিকা আল-কুদস আলআরাবি জানায়, হোমস প্রদেশের আল-কুসায়ির এলাকায় আসাদ বাহিনী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করার কাজ করছে। যা লেবানন থেকে দুই কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে অবস্থিত। জেরুজালেম পোস্ট। পত্রিকাটিতে বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ এলাকায় তারা ইউরেনিয়াম রড স্থানান্তর করেছে। যা ইরান ও উত্তর কোরিয়ায় তৈরি। দেইর আল-জোর প্রদেশের আল-কিবার চুল্লি ধ্বংস করার খুব অল্প সময়ের মধ্যে অপর একটি চুল্লি তৈরি করার কাজ শুরু হয়। যা উত্তর কোরিয়ানরা তৈরি করছে। সিরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে জার্মানির ডার স্পাইগেল পত্রিকা ২০১৫ সালে প্রথম প্রতিবেদন ছাপায়। একই সময়ে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে গোয়েন্দা সূত্র ও বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যাপকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচীর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট খবর জানায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, আট হাজারের কিছু বেশি ইউরেনিয়াম রড ওই স্থাপনায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা হয় তো নতুন চুল্লি বা সমৃদ্ধকরণ এলাকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবেদনের মতে, ইরানিয়ান রেভ্যুলিউশনারি গার্ডস, হিজবুল্লাহ ও উত্তর কোরিয়া এই সমৃদ্ধকরণ এলাকার কাজে নিয়োজিত। এর নির্মাণ কাজ ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয়েছে। আল-কিবার এলাকায় ইসরাইলের বিমান হামলার দুই বছর পর এই কাজ শুরু হয়েছে। স্পাইগেলের দেখানো উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায় যে, ব্লোসাহ শহরের কাছের এলাকাটিতে ছয়টি কাঠামো ও একটি পাওয়ার গ্রিড যুক্ত। এটি ভাল যে ব্যবহারের জন্য কাছের জাইতা খালকে যুক্ত করা হয়েছে। পত্রিকাটি আরও জানায়, এ ধরনের সংযোগ প্রচলিত গুপ্ত অস্ত্রের ভা-ার তৈরির জন্য অপ্রয়োজনীয়। তবে এটি পরমাণু কর্মসূচীর উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয়। নিবন্ধটিতে দামেস্ক, তেহরান ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে চলমান সহযোগিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মধ্যে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্রের সহযোগিতার বিষয়ও নথিভুক্ত করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্ক টাইমস সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রতিবেদন ছাপায়। এতে জাতিসংঘের এক অপ্রকাশিত প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সম্মতির বিষয়ে বলা হয়। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, উত্তর কোরিয়ার দুটি জাহাজে করে এসিড প্রতিরোধী টাইলস পাঠানো হয়। যা রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচীর কাঠামোতে ব্যবহার করা হয়। সিরিয়া যাওয়ার পথে জাহাজ দুটিকে আটক করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিবিদের সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র উন্নয়ন ও ক্ষেপণাস্ত্রগারে কাজ করতে দেখা যায়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিষেধাজ্ঞাকে ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমন্বয়, অগ্রাধিকার ও প্রয়োজনীয় সম্পদ বরাদ্দ কার্যকর করার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইসরাইলী কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত তাদের সীমান্তে ইরানীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি নিয়ে সচেতন রয়েছেন। যাতে তেহরান থেকে লেবানন হয়ে সিরিয়ায় হিজবুল্লারা অত্যাধুনিক অস্ত্র সরঞ্জাম পাচার করতে না পারে। দেশটি ইরান ও হিজবুল্লা উভয়কেই লাল তালিকাভুক্ত করে চাপ দিয়ে আসছে। সিরিয়ায় সামরিক কার্যক্রম নিয়ে তৈরি বিদেশী প্রতিবেদন নিয়ে খুব কমই মন্তব্য করে ইসরাইল। তবে সিরিয়ায় এক শ’ হিজবুল্লা গাড়ি বহর ও অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলার ব্যাপারে তাদের অনুমতি রয়েছে। ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, আমরা তথ্য ও সম্ভাব্যতা বিচার করে হামলা অব্যাহত থাকবে।
×