ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৮ মার্চ ২০১৮

 শান্তিপূর্ণ আন্দোলন  চালিয়ে যেতে বলেছেন খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির সিনিয়র নেতারা কারাবন্দী দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। বুধবার বিকেলে তারা নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের সাক্ষাত কক্ষে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকালে দলের সার্বিক পরিস্থিতি, আন্দোলন কর্মসূচী ও মামলার আইনী লড়াইসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সরকারের কোন প্রকার উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন, তার শরীর ভাল আছে। তার মনোবল অনেক দৃঢ়, অটুট ও উঁচু রয়েছে। তিনি সব ধরনের পরিস্থিতি সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করছেন। দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য যে কোন ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছেন। একদিন সত্য প্রতিষ্ঠিত হবেই বলে মনে করেন খালেদা জিয়া। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কানি দিচ্ছে। তাই খালেদা জিয়া এ ধরনের উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে বলেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। সরকার নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার জামিন পেছাচ্ছেন। এখন তার কারাবাস দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে। আইনী ও রাজনৈতিকভাবে আমরা এসব মোকাবেলা করব। তিনি কারারুদ্ধ অবস্থায় দেশের কথাই চিন্তা করছেন। আমরা তার সঙ্গে আলোচনা করে এটুকু বুঝতে পেরেছি যে, তার মনোবল অত্যন্ত উঁচু ও সত্যের পথে। সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের চেয়ারপার্সন কারান্তরীণ হওয়ার পর থেকে আমরা যৌথ প্রচেষ্টায় আন্দোলন পরিচালনা করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু পরিচালনা করছি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর তার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেছিলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়। বুধবার বিকেল ৩টায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারের সাক্ষাত কক্ষে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য ও তাঁর একান্ত সচিব। খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা কথা বলার পর তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকারীদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেলখানায় দেখা করার অনুমতি পান বিএনপির ৯ নেতা ও তাঁর একান্ত সচিব। এর মধ্যে বুধবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান ও নজরুল ইসলাম খান যাননি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি মেলেনি- আমীর খসরু ॥ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১২ মার্চ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি মেলেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া খুলনা ও চট্টগ্রামে দুটি জনসভা আয়োজনের কথা থাকলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি তিনি জানান। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, এক সপ্তাহ আগে ১২ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত অনুমতি মেলেনি। অথচ আওয়ামী লীগ জনসভা করেছে। আর এই জনসভার জন্য তারা ১০ দিন ধরে ঢাকায় মাইকিং করেছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই তাদের ব্যানার-ফেস্টুন। কিন্তু দুঃখ হয়, কারণ আমরা তো এগুলো চাচ্ছি না। আমরা শুধু একটি সমাবেশের অনুমতি চাচ্ছি। এটা তো আমাদের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে আজ বিএনপি বঞ্চিত। কেন একটি দলকে তার রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে?
×