ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মাপাড়ে নৌকার জোয়ার

প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখার জন্য মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখার জন্য মানুষের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহী সফরকে ঘিরে কয়েক সপ্তাহ ধরে সাজছিল নগরী। সমাবেশের দিন সভাস্থল রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠসহ নগরী জুড়ে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীতে বাড়তে থাকে মানুষ। মাদ্রাসা মাঠসহ আশপাশের এলাকায় সাধারণ মানুষের ঢল নামে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে কড়া রোদ ও গরম উপেক্ষা করে কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠ। ছোট শিশু থেকে অশীতিপর বৃদ্ধ, সব বয়সী মানুষ এসেছিলেন প্রিয় নেত্রীকে এক পলক দেখার আশায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাস্থলে উপস্থিত হলে লাখো মানুষ সম্মিলিত কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ সেøাগানে তাঁকে স্বাগত জানান। বৃহস্পতিবার দুইটায় নগরীর মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত এই জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকাল থেকে রাজশাহী ও এর আশপাশের জেলাগুলো থেকে বাসে, ট্রেনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ আসতে থাকে। নানা বয়সী মানুষ মাথায় লাল-সবুজ টুপি, বুকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত টিশার্ট, গালে নৌকার আলপনা এঁকে জনসভাস্থলে জড়ো হতে থাকে। কেউ কেউ আবার বানিয়ে এনেছেন নৌকা। দুপুর ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরও আসতে থাকে জনস্রোত। মাদ্রাসা মাঠের আশপাশের সড়ক সমাবেশে যোগ দিতে আসা মানুষে কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। যেন পদ্মাপাড়ে উঠে নৌকার জোয়ার। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে সকালেই এসেছিলেন সত্তরোর্ধ মোঃ কোরমান আলী। হাঁটু ও কোমরের ব্যথা উপেক্ষা করে দাঁড়িয়েছিলেন মাদ্রাসা মাঠে ঢোকার চেকপোস্টে। বললেন, আমার হাঁটতে কষ্ট হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যার কথা শোনার জন্যই সব কষ্ট উপেক্ষা করে সকালে এখানে এসেছি। নির্বাচনের আগে তিনি কি দিক-নির্দেশনা দেন সেটা শুনতে এসেছি। একবার তাঁকে দেখতে পেলে এই কষ্টটা সার্থক হয়ে যায়। চাচার সঙ্গে জনসভায় এসেছিল স্কুলছাত্র রবিন। তৃতীয় শ্রেণীর এই ছাত্র উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলল, প্রধানমন্ত্রী আসছে, তাঁকে একবার দেখার খুব ইচ্ছা। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে রাজশাহীজুড়ে বিরাজ করছিল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ। মাদ্রাসা মাঠের চারধারে শোভা পায় বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয়-নেতাদের ছবি সংবলিত ব্যানার-বিলবোর্ড। নগরী ছেয়ে যায় নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা তোরণে। সভামঞ্চের সামনে রাখা হয় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক বিশাল একটি নৌকা। এদিকে যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমাবেশস্থলে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা। নেতাকর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে সভাস্থল মাদ্রাসা মাঠের আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বিপুলসংখ্যক পুলিশ, গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং আনসার সদস্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি করে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের সভাস্থলে প্রবেশ করান। জনস্রোতের কারণে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েক হাজার মানুষ সভাস্থলে ঢুকতে না পেরে বাইরে অবস্থান করে। এ সময় জনস্রোত সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তাকর্মীদের। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এহসান মাহফুজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে সফল করতে রাজশাহী মহানগর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। রাজশাহীবাসী তাকিয়ে আছে তিনি নগরীকে কি দেন। তীব্র গরম, ধুলা ও ভিড় উপেক্ষা করেও নানা স্তরের মানুষও উপস্থিত হয়েছে শুধু প্রিয় নেত্রীকে দেখার জন্য। ভেতরে ঢুকতে না পেরে বাইরেও হাজার হাজার মানুষ অবস্থান করছিল। মাদ্রাসা মাঠ ছাড়িয়ে মানুষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়।
×