ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাইক্ষ্যংছড়িতে ডাকাতের আতঙ্কে ঘরছাড়া আদিবাসীরা

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নাইক্ষ্যংছড়িতে ডাকাতের আতঙ্কে ঘরছাড়া আদিবাসীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ১৭ ফেব্রুয়ারি ॥ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সন্ধ্যা নামলেই ডাকাতদলের হানা। আতঙ্কে নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাতগজ্জা পাড়ার আদিবাসী চাক সম্প্রদায়ের পরিবারের মানুষ এখন ঘরছাড়া। পাড়ার রাস্তাঘাট ও বসবাসরত ঘর-বাড়ি এখন ফাঁকা, সবাই যে যারা মতো আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি-সোনাইছড়ি সড়কে মাঝখানে জুমখোলা এলাকায় ৩০-৩৫ জন সাধারণ পথযাত্রীদেরকে গতিরোধ করে টাকা-পয়সা, ব্যবহারের মোবাইলসহ আরও অন্যান্য জিনিসপত্র লুটপাট করে নেয় অস্ত্রধারী ডাকাতদল। এতে যৌথবাহিনীর অভিযানে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সাতগজ্জা চাক পাড়ার আশপাশে আশ্রয় নেয় । গত শুক্রবার অস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে দেখে আদিবাসীরা আতঙ্কে সেই রাতে সাত পরিবারের ছোট শিশু, বৃদ্ধসহ মহিলাদেরকে অন্যত্রে পাঠিয়ে দিয়ে পুরুষেরা ওইসব ডাকাতদলকে ধাওয়া করে ধরতে চাইলে ডাকাতদল ফাঁকা গুলি করে আতঙ্কিত করে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই অস্ত্রধারী ডাকাতদলেরা গহীন অরণ্যে ঢুকে পড়ে। আরও জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের মধ্যম চাক পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয় সাত পরিবার। এরা হলেন, মংমং চাকের স্ত্রী মাইয়ে চাক, ছাহ্লাথোয়াই চাকের স্ত্রী ইউ চিং চাক, ক্যউহ্লা চিং চাকের স্ত্রী এ মাই চিং চাক, থোয়াইছা প্রু চাকের স্ত্রী মা চা চিং চাক, ও চিং থোয়াই চাকের স্ত্রী হ্লনি খাই চাক প্রমুখ। জানা যায়, সাতগজ্জা পাড়ায় মূলত চাক সম্প্রদায় পরিবারের বসবাস। দীর্ঘ বছর ধরে পাহাড়ের ঝাঁড়-জঙ্গল আবাদ করে জুম চাষ করে আসছিল ওই সাত পরিবারের পুরুষ-মহিলারা। তারা অস্ত্রধারী একদল যুবক ঘুরাফেরা করতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে ঘরছাড়তে বাধ্য হয়। যৌথ অভিযানের মাধ্যমে ওই অস্ত্রধারী যুবকদলকে আটকাতে না পারলে পাড়ায় যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানান পালিয়ে আসা মহিলারা। ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথ পরিচালনায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে আসা হ্লানি খাই চাক জানান, গত শুক্রবার সকাল বেলায় আমার স্বামী দৈনন্দিন পালিত গরুর পাল নিয়ে জুম পাহাড়ে যাওয়ার সময় ১০-১৫ অস্ত্রধারী যুবকের কবলে পড়লে সে ভয়ে কাতর হয়ে যায়। তাকে গতিরোধ করে প্রথমে সঙ্গে থাকা মোবাইল নিয়ে ফেলা হয়। পরে তারা বলেন, পুলিশ-বিজিবিকে খবর দিলে একেবারে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। এই ঘটনার পর স্থানীয় আদিবাসী ও বাঙালীর মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
×