ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় দেশে ভাষা আন্দোলন শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ১৭ দিনের মাথায় তৎকালীন পূর্ব বাংলার (পূর্ব পাকিস্তান) প্রতি পাকিস্তানী শাসক শ্রেণীর বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্য সামনে নিয়ে তমদ্দুন মজলিস গঠিত হয়। প্রথমেই এর সংগঠকেরা পাকিস্তানী শাসকদের উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিরোধিতা করে এবং বাংলাকেও উর্দুর সঙ্গে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে আন্দোলনের সূচনা করেন। তমদ্দুন মজলিস ছিল মূলত সাংস্কৃতিক একটি সংগঠন। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অধ্যাপক আবুল কাসেম (পরে প্রিন্সিপাল)। শুরুতে তিনি এর সম্পাদক ছিলেন। সদস্যদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম (স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি), শামসুল আলম, ফজলুর রহমান ভুঁইয়া, একেএম আহসান, কবি মোফাখখারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক। তমদ্দুন মজলিসই প্রথম লেখক সম্প্রদায় কর্তৃক উত্থাপিত রাষ্ট্রভাষা বাংলার বুদ্ধিবৃত্তিক দাবিকে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও বিক্ষোভের মাধ্যমে রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেন। ২-৭ সেপ্টেম্বর সময়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়। উক্ত নীতিমালার মধ্যে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার এবং ঐতিহাসকি লাহোর প্রস্তাবের আলোকে পূর্ব বাংলার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। তমদ্দুন মজলিস গঠনের দিন থেকে অধ্যাপক আবুল কাসেমের বাসভবন ঢাকাস্থ ১৯ আজিমপুর রোড থেকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সালে উক্ত বাসভবনের একটি কক্ষ তমদ্দুন মজলিসের অফিস হিসেবে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের এটি ছিল প্রথম অফিস। ১৯নং আজিমপুর হয়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার। এদিন উক্ত অফিসে আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ১৬-৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভাষা আন্দোলন ও মজলিসের আদর্শ-উদ্দেশ্যের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে সাংগঠনিক পক্ষ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
×