ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব এজতেমা নিয়ে চক্রান্ত বন্ধে সরকারের সহযোগিতা কামনা

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

বিশ্ব এজতেমা নিয়ে চক্রান্ত বন্ধে সরকারের সহযোগিতা কামনা

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/নূরুল ইসলাম গাজীপুর ও টঙ্গী থেকে ॥ বিশ্ব এজতেমায় তাবলীগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সা’দ-এর যোগদানকে ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের দ্রুত অবসান চেয়েছেন বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা। রবিবার দুপুরে টঙ্গীতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চল কার্যালয় চত্বরে বিশ্ব এজতেমার ফলো-আপ সভায় বিশ্ব এজতেমার শীর্ষ মুরব্বিরা ওই দাবি জানিয়েছেন। গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে ও গাজীপুর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এমএ মান্নান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার এম বজলুল করিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ হেলাল উদ্দিন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেল শেখ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, তাবলীগ জামাতের মুরব্বি ইঞ্জিনিয়ার মেজবাহ উদ্দীন, ড. রফিকুল ইসলাম ও প্রকৌশলী মোঃ গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় র‌্যাব, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসি, বিআরটিএ, ডেসকো, তিতাস গ্যাস, টেলিফোন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, এলজিইডি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাগণ প্রত্যেকে তাদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তাবলীগ জামাতের ও বিশ্ব এজতেমার মুরব্বি সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমায় ভারতের মাওলানা সাদ সাহেব যদি না আসেন, তবে এটা বিশ্ব এজতেমা থাকবে না। এটা হবে আমাদের স্থানীয় এজতেমা, পাকিস্তানী ম্যানেজড এজতেমা। এটা হবে বাংলাদেশী এজতেমা, এটা বিশ্ব এজতেমা হবে না। কারণ অনেক বিদেশী ও দেশের মুসল্লিরা জানিয়েছেন, সাদ সাহেব যদি বিশ্ব এজতেমায় অংশ না নিতে পারেন তবে তারা এ এজতেমায় অংশ নেবেন না। এটা পাকিস্তানীদের একটা চাল। এ ব্যাপারে তিনি সরকার তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছেন। এছাড়া বিদেশী মুসল্লিদের জন্য অন এ্যারাইভাল ভিসার মেয়াদ ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি বলেছেন, বিশ্ব এজতেমা নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব এজতেমা সরিয়ে নিতে পাকিস্তানীরা আমাদের দেশের একটি পক্ষকে ইন্ধন দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আপনাদের কথা থেকে মনে হচ্ছে, তাবলীগের শূরা মুরব্বিদের মধ্যে আপনাদের যোগাযোগের গ্যাপ আছে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় শনিবার তাবলীগের শূরা সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এজতেমার মুরব্বিদের দাওয়াত তো আপনারা দিয়েছেন। দাওয়াতে কে আসবে না আসবে সেটা তো আপনাদের মুরব্বিদের ব্যাপার। এ ব্যাপারে তিনি মুরব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে ফয়সালার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে সব কিছুই ফয়সালা হয়ে যাবে বলেন তিনি। তিনি সকলকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছেন। বৈঠকে বিশ্ব এজতেমার প্রস্তুতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। এ সময় গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ হারুন অর রশীদ জানান, টঙ্গী বিশ্ব এজতেমা এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ সদস্য আট ভাগে ভাগ হয়ে পাঁচ স্তরে মুসল্লিদের নিরাপত্তা রক্ষা করবে। মুসল্লিদের প্রবেশ পথে সন্দেহভাজনদের মেটাল ডিটেক্টর, ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার ও ৪১টি সিসি ক্যামেরা থেকে পুরো এজতেমাস্থল পর্যবেক্ষণ করা হবে। এজতেমা ময়দানের প্রতি খিত্তায় ৬ জন করে পুলিশ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন। এবার গতবারের চেয়ে প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য ও ৫টি ওয়াচ টাওয়ার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদেরও নজরদারি করা হবে। বিশ্ব এজতেমা এলাকায় হকার ও ভিক্ষুক মুক্ত করা হবে। এছাড়া রবিবার থেকে এজতেমার শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাজীপুরের পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে এজতেমা ময়দানগামী সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের ১৮শ’ সদস্য দায়িত্বপালন করবেন।
×