ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে অপরাধ করতে গিয়ে ধরা পড়ল ১১ ভুয়া পুলিশ

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

চট্টগ্রামে অপরাধ করতে গিয়ে ধরা পড়ল ১১ ভুয়া পুলিশ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে পুলিশ পরিচয়ে অপরাধ করতে গিয়ে ধরা পড়ল ভুয়া গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। মাত্র পাঁচ দিন আগে এক কলেজ ছাত্রের কাছ থেকে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযান শুরু হয়। গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে বুধবার সকাল পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে এসব ভুয়া গোয়েন্দা। অভিযোগ উঠেছে গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের ব্যবহার্য জিনিস খোলা বাজারে সহজলভ্য হওয়ায় অপরাধীরাও কৌশল অবলম্বন করছে। জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর কোতোয়ালি থানাধীন লাভলেইন রোডস্থ কাদিয়ানি মসজিদের সামনে হঠাৎ রাস্তার ওপর নগরীর ৩নং রুটে চলাচলরত টাউন সাভির্সের একটি বাস কয়েকজন মিলে থামিয়ে দেয়। এ সময় বাসের যাত্রী চট্টগ্রাম সিটি কলেজের অনার্সে অধ্যয়নরত ইমতিয়াজ উদ্দিন প্রকাশ ইমন (২২)কে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গাড়ি হতে জোরপূর্বক নামিয়ে ফেলে। তাদেরই একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে তুলে নেয়া হয় ইমনকে। এরপর তারা ইমনকে সিআরবি এলাকায় নিয়ে যায়। ইমনকে হেনস্থা করতে তারা প্রথমে ব্যাগে ইয়াবা ট্যাবলেট রয়েছে অভিযোগ তোলে। পরে মোটরসাইকেলে থাকা তাদেরই সদস্যদের কাছে ইমনের ব্যাগ তুলে দেয়। তবে ইমনের ব্যাগে তার দুবাই প্রবাসী মামার ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও বই খাতা ছিল। ট্যাক্সিতে থাকা অপর তিন সদস্য ইমনের কাছ থেকে ২টি মোবাইল সেট ও মানিব্যাগে থাকা ১৩ শ’ টাকাও ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তী ট্যাক্সিতে থাকা ২ সদস্য ইমনকে নিয়ে পলোগ্রাউন্ড রাস্তা হয়ে কদমতলী পৌঁছায়। ট্যাক্সিটি দেওয়ানহাট হইতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনগামী ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে মাঝামাঝি অবস্থানে পৌঁছালে নির্জন রাস্তায়ও মারধর শুরু করে ইমনকে। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের বাঁচাতে ট্যাক্সিযোগে পালিয়ে যায়। তবে ইমন ট্যাক্সির পেছন পেছন দৌড়ে নাম্বার প্লেটের নাম্বার মুখস্থ করে ফেলে। এমনকি বিষয়টি পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনকে জানায়। পরে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগে গিয়ে প্রথমে মৌখিক অভিযোগ করে ইমন ও তার পরিবারের সদস্যরা। গোয়েন্দা বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হাসান মোঃ শওকত আলী এর তত্ত্ববধানে এবং সার্বিক নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইলিয়াছ খানের নেতৃত্বে এসআই মোঃ আব্দুল মোনাফ, এসআই মোঃ রায়হান উদ্দিন, এসআই মোঃ আলা উদ্দিন, এএসআই শিবু চন্দ্রসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযানে নামে গত ২ ডিসেম্বর। এ অভিযানে পুলিশ মোট ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনায় ব্যবহৃত ট্যাক্সি, ২টি মোটরসাইকেল, ১টি ওয়ারলেস সেট, ১ জোড়া হ্যান্ডকাপ, ২টি ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ১টি খেলনা পিস্তল, লুণ্ঠিত ২টি মোবাইল সেট ও লুণ্ঠিত টাকার মধ্যে সাড়ে ৩২ হাজার টাকা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মঙ্গলবার একটি মামলা (নং-৫ তারিখঃ ২-০১-২০১৮ইং) দায়ের হয়েছে।
×