ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় নদী খনন ও টিআরএম বাস্তবায়ন দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

সাতক্ষীরায় নদী খনন ও টিআরএম বাস্তবায়ন দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ জলাবদ্ধতার ভোগান্তির শিকার সাতক্ষীরার তালা, খুলনার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা উপজেলার শতাধিক গ্রামের ২ লাখ মানুষ। এজন্য নিষ্কাশন চ্যানেল হিসেবে ব্যবহৃত শালতা নদী খনন ও টিআরএম বাস্তবায়নের দাবিতে সোচ্চার অববাহিকার মানুষ। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে পানি কমিটির ব্যানারে শালতা অববাহিকার শত শত মানুষের উপস্থিতিতে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ৬ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, শালতা বাঁচাও কমিটির সভাপতি সরদার ইমান আলী, কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম, প্রণব ঘোষ বাবলু, রফিকুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান, জাহিন খান স্বাক্ষর প্রমুখ। প্রধানমস্ত্রীর কাছে দেয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার ১৬ ও ১৭নং পোল্ডারের মধ্য দিয়ে পশ্চিম শালতা নদীর অববাহিকার সাথে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা উপজেলা এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার মোট ১১টি ইউনিয়নের দুই লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ৯০ দশকের শুরুতেই পলি ভরাটে নদীর নাব্য সংকটের কারণে এ এলাকায় জলাবদ্ধতা। গত এক দশক ধরে জলাবদ্ধতার তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে পলি জমে ১৮ কিলোমিটার শালতা নদীর উপর অংশে প্রায় ৯ কিমি নদী ইতোমধ্যে মরে গেছে। এ নদীর সাথে যুক্ত নদী আমতলী, ঘ্যাংরাইল এবং হাড়িয়ানদী শালতা নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার নিচু বসতি এলাকা প্লাবিত হয়। ভেঙ্গে যায় মাছ চাষের বেড়িবাঁধ। আমন ধান বীজতলাসহ জমি তলিয়ে যায়। বছরের প্রায় অর্ধেক সময় ধরে জীবন জীবিকায় দেখা দেয় মারাত্মক সংকট। নদীর নাব্যতা সংকটের ফলে নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় নদী দিয়ে স্বাভাবিক বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হতে পারে না। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এলাকার মানুষের বারবার পেশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। জনজীবনে দেখা দিয়েছে একরকম অচলাবস্থা। প্রতি বৎসর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বাস্তভিটা ত্যাগ করে বসবাসের জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছে।স্মারকলিপিতে এসএ রেকর্ড অনুযায়ী শালতা, আমতলী, ঘ্যাংরাইল, বাদুরগাছা, হাড়িয়া ও গুয়াচাপ নদী খনন, খনন করা মাটি দিয়ে নদীর দুপাশে উঁচু ও মজবুত বাঁধ কাম রাস্তা নির্মাণ এবং রাস্তার দুপাশে বনায়ন করার দাবি জানানো হয়েছে। যশোর স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, আগামী মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিলকপালিয়ায় টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) বা জোয়ারাধার চালুর দাবি করেছে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি। আর তা যদি না হয় তাহলে ২১ ভেন্ট ও ৯ ভেন্টের মাঝ দিয়ে সরাসরি নদী সংযোগ দেয়ার দাবি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগ্রাম কমিটির নেতারা এই দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১০ ডিসেম্বর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতাদের উপস্থিতিতে মতবিনিময়সভা হয়। সেখানে পানিসম্পদমন্ত্রী মোঃ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীরবিক্রম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, এ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপিসহ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পাউবোর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনেক যুক্তিতর্কের মাধ্যমে তাদেরকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝানো গেছে। শেষ পর্যন্ত জনগণের অব্যাহত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে টিআরএমবিরোধী চক্রান্ত ভেদ করে আবার বিল কপালিয়ায় টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২০১৯ সালে বিলকপালিয়ায় টিআরএম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
×