ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘অন্তর জ্বালা’ নামটি আমার দেয়া : পরীমণি

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

‘অন্তর জ্বালা’ নামটি আমার দেয়া : পরীমণি

আনন্দকণ্ঠ : ‘অন্তর জ্বালা’ ছবির গান এবং ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? পরীমণি : অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি। ‘ছোট ছোট কিছু আশা’ অসাধারণ রোমান্টিক একটি গান। ইউটিউবে মুক্তির পর প্রচুর সাড়া পেয়েছি। ভাবনার চেয়েও বেশি সাড়া পেয়েছি। দর্শকদের এমন ভাল লাগার সুবাদে সিনেমা হল মালিকদের নিকট থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে ছবিটি। যে সব সিনেমা হল বন্ধ থাকে, সাধারণত ঈদের সময় খুলে সে সব সিনেমা হল অন্তর জ্বালা ছবির জন্য খুলেছে শুধু মাত্র ট্রেলার গান ভাল লেগেছে বলে। সিনেমা পাড়ায় যেন ঈদ চলে এসেছে সবাই বাড়তি আগ্রহ দেখাচ্ছে ছবিটির ব্যাপারে। তাছাড়া পরিচালক মালেক আফসারি তার সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে দর্শকদের কাছে জায়েদ খান ও আমাকে ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। আনন্দকণ্ঠ : ‘অন্তর জ্বালা’ ছবির মধ্যে জ্বালাটা কি প্রেমের? পরীমণি : না। এটি প্রেমনির্ভর না, জীবননির্ভর ছবি। প্রেম ছবির একটি অংশ মাত্র। এখানে ছবি দেখার পর যে উচ্চারণ করবে জ্বালা সে-ই অনুভর করতে পারবে মূলত কিসের জ্বালার কথা বলতে চেয়েছেন পরিচালক। ছবিতে হিন্দু পরিবারের একটি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আশা করি আগামীকাল সবাই প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখবেন এবং ছবিটি সবার ভাল লাগবে। আনন্দকণ্ঠ : ‘অন্তর জ্বালা’ সিনেমায় দর্শক কি নতুন পরীমণি কে পাবেন? পরীমণি : হ্যাঁ। একজন নতুন পরীকে দেখতে পাবেন দর্শক। যেখানে পরী শুধু নায়িকা নন। প্রথমত বলতে হবে সে একজন শিল্পী, তারপর নায়িকা। সব সিনেমায় চরিত্র বুঝে অভিনয় করার জায়গা থাকে না। কিছু সিনেমা আছে যেখানে শুধু নায়িকা হয়েই থাকা, সেখানে নায়িকার পাঁচটি গান থাকবে কিছু ?দৃশ্য থাকবে- এতটুকুই। কিন্তু কিছু চরিত্র রয়েছে যেখানে মানুষ চরিত্রটা নিয়েই ভাববে। ‘অন্তর জ্বালা’য় আমাকে তেমনই একটি চরিত্রে দর্শক দেখবেন। দেখার পর মনে হবে এই চরিত্র কে করেছে? উত্তরে নাম আসবে। এরপর আসবে পরী কে? উত্তরে আসবে নায়িকা। অর্থাৎ নায়িকাটা পরে আসবে। আগে আসবে অভিনয়। সব কিছুতেই নতুনত্ব আছে। আনন্দকণ্ঠ : ‘অন্তর জ্বালা’ সিনেমায় অভিনয়ে নতুন কিছু করতে হয়েছে কি যা অন্য সিনেমায় কখনও করেননি? পরীমণি : মেকআপ নিয়ে আমরা সুন্দরভাবে সেজে পর্দায় কৃত্রিম হাসি। তখন দর্শক বলে উঠেন- ওয়াও! কিন্তু এই সিনেমায় দর্শকের এই অনুভূতি হবে ভিন্নভাবে। এখানে মেকআপ ব্যবহার না করেই অভিনয় দক্ষতা দিয়ে, মেধা দিয়ে চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছি। এই বিষয়টিই ছিল আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই- আমি পাস করব। আমার চরিত্রের জন্য কোন মেকআপ প্রয়োজন হয়নি। এমন কিছু দৃশ্য আছে যেখানে পানি দিয়েও মুখ ধুইনি। আবার এমন কিছু দৃশ্য আছে যেখানে শুধুমাত্র একটি টিপ কপালে দিয়েছি। আনন্দকণ্ঠ : নির্মাতা মালেক আফসারীর সঙ্গে কাজ করে আপনি কি ভিন্নতা পেয়েছেন? পরীমণি : আমি এ পর্যন্ত অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু তাদের মধ্যে এমন দু-একজন ছিলেন যাদের নাম আমি বলতে চাই না। তারা গল্প শুনিয়েছেন; শুনে মনে হয়েছে আমি সিনেমাটা আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। ফিলটা এমন ছিল। কিন্তু কি হচ্ছে? ক্যামেরাতে যখন কাজ হয় তখন এই জায়গাটা ভাগ হয়ে যায়। তখন পরিচালকের সঙ্গে যুক্ত হন চিত্রগ্রাহক। শুটিংয়ের সময় পরিচালকের ভাবনার জায়গাটা উনিশ-বিশ হয়ে যায়। শূটিং শেষে যখন সম্পাদনা হয় তখন আবার সতেরো-বিশ হয়। তারপর আমি যখন ডাবিংয়ে যাই তখন দেখি পনেরো-বিশ হয়ে গেছে। যখন হলে মুক্তি পায় তখন প্রথম গল্প বলার বিষয়টির সঙ্গে মিল খুঁজে পাই না। আফসারী ভাইয়ের বিষয়টা হলো, তিনি যা বলেন তার থেকে তিনগুণ ভাল করে কাজ শেষ করেন। এর কারণ হচ্ছে তিনি যা ফিল করেন তা তিনি চিত্রগ্রাহককে ফিল করান, আফসারী ভাইয়ের পছন্দ না হলে একটা শট বার বার নেন। লাইটম্যান থেকে সবাইকে কিভাবে যেন তিনি বুঝতে পারেন। সিকোয়েন্সটা কিভাবে যেন মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেন। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো জায়েদ খান। এটা একটা ম্যাজিক। আর এই ম্যাজিকটা থাকল বাংলার দর্শকদের জন্য। আনন্দকণ্ঠ : ছবিটি নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী? পরীমণি : ‘অন্তর জ্বালা’ ছবিটি নিয়ে দারুণ আশাবাদী। ছবিটি নিয়ে আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে। এটি দর্শকদের ভাল লাগবেই! মালেক আফসারীর ছবিতে কাজ করার স্বপ্ন ছিল আমার। সেটি পূরণ হয়েছে। এ ছবির গল্পটিও চমৎকার। আর আমার চরিত্রটাও ভিন্ন রকম। সবকিছু মিলিয়ে এ ছবি নিয়ে আমি আশাবাদী। ছবিতে প্রয়াত নায়ক মান্না অভিনীত বেশ কিছু ছবির ফুটেজও দেখানো হবে। এর মধ্য দিয়ে প্রয়াত নায়ক মান্নাকে সম্মান জানাতে চেয়েছেন পরিচালক মালেক আফসারী। আনন্দকণ্ঠ : ‘অন্তর জ্বালা’ নিয়ে দর্শকের উদ্দেশে কি বলবেন? পরীমণি : ‘অন্তর জ্বালা’ পরিপূর্ণভাবে দর্শকদের সিনেমা। সর্বোপরি এটা পুরো বাংলাদেশের সিনেমা। দর্শকরা হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখলে আমরা অনুপ্রাণিত হব। আর সেই অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও ভাল কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা থাকবে তাদের জন্য। এই ছবিটিতে জায়েদ খান অনেক পরিশ্রম করে নিজেকে উপ¯'াপন করেছেন। জায়েদের অভিনয় দেখে সবাই মুগ্ধ হবেন আশা করি।
×