ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছন্দে-জীবনানন্দে’৭১-এ পা

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

ছন্দে-জীবনানন্দে’৭১-এ পা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আবহ ছিল পরিবারের মধ্যে। মাত্র তিন বছর বয়সে মঞ্চে ওঠেন। অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমামকে বিয়ের পর লায়লা নার্গিস থেকে হলেন লায়লা হাসান। আশির দশকে বিটিভিতে ‘রুমঝুম’ নামের ছোটদের নাচ শেখার অনুষ্ঠানে তার পরিচিতি ঘটে। মণিবর্ধন মহাশয়, অজিত সান্যাল, বাবুরাম সিংহ, জিএ মান্নান, শমর ভট্টাচার্যের মতো প্রখ্যাত নৃত্যগুরুদের সান্নিধ্যে নৃত্যকলায় পারঙ্গম এ শিল্পী অভিনয়েও সবার দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। সংস্কৃতিজন, মুক্তিযোদ্ধা নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান সত্তর পেরিয়ে একাত্তরে পা রেখেছেন এ বছরের ৮ আগস্ট। গুণী এই শিল্পীর ৭০তম জন্মবার্ষিকীকে নাচ-গান আর কথনে ব্যঞ্জনাময় করে তোলা হয় শনিবার সন্ধ্যায়। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘ছন্দে-জীবনানন্দে ৭১-এ পা’ শিরোনামের এ বর্ণাঢ্য আয়োজন করে জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই শ্রোতা-দর্শকের উপস্থিতিতে মিলনায়তন কানায় কানায় ভর্তি। নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নৃত্যনন্দনের শিল্পীদের পরিবেশনায় বর্ণাঢ্য নৃত্যের ছন্দে যখন মঞ্চ যখন আলোকিত, ঠিক তখনই শিল্পীদের মাঝে সদালাস্যময়ী শিল্পী লায়লা হাসান সবাইকে হাত উঁচিয়ে ইঙ্গিত দিলেন আমিও আপনাদের লোক। সবাই করতালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন শিল্পীকে। এভাবেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। মঞ্চে লায়লা হাসানের পাশে আমন্ত্রণ জানানো হয় তারই জীবনসঙ্গী সংস্কৃতিজন হাসান ইমামকে সঙ্গে ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের চেয়ারপার্সন ড. মাহফুজা খানম। পরে লায়লা হাসানের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্বলনে অংশ নেন নৃত্যশিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদ, আমানুল হকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর লায়লা হাসানের ওপর শংসা বচন পাঠ করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। উত্তরীয় পরিয়ে দেন ও উপহার তুলে দেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও নৃত্যগুরু আমানুল হক। এছাড়া শিল্পী আব্দুল মান্নানের তৈরি করা লায়লা হাসানের প্রতিকৃতি তুলে দেন লায়লা হাসানের ৭০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গঠিত জাতীয় কমিটির দুই সদস্য সচিব-বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন ও কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। শিল্পী লায়লা হাসানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি চলতে থাকে শুভেচ্ছা বক্তব্য। শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক। তিনি বলেন, শিল্পী লায়লা হাসান শুধু একজন নৃত্যশিল্পী বা অভিনয় শিল্পী নন, তিনি একজন ভাল সংসারী ব্যক্তি। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন সৈয়দ হাসান ইমাম, ডালিয়া নওশিন, আব্দুল ওয়াদুদ এবং অনিমা মুক্তি গোমেজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন বাচিকশিল্পী কাজী মদিনা ও হাসান আরিফ। এছাড়া দলীয় সঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক নজরুল কবির। গানে গানে নায়করাজ রাজ্জাক ও সঙ্গীতশিল্পী আবদুল জব্বার স্মরণ ॥ মিলনায়তনজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’, গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’, ‘অনেক সাধের ময়না আমার’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’সহ বেশকিছু কালজয়ী গান। যেগুলো নিবেদন করা হয় দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব প্রয়াত নায়করাজ রাজ্জাক ও সঙ্গীতশিল্পী আবদুল জব্বারের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। দি ডেইলি স্টার-বেঙ্গল আর্টস প্রিসিঙ্কটে শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী রাজা বশির, অলোক সেন, মুহিন খান ও তানজিনা করিম স্বরলিপি। দি ডেইলি স্টার আয়োজিত নিয়মিত বাংলা গানের এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাদিয়া আফরিন মল্লিক। গান ও কবিতার যুগলবন্দীতে মুগ্ধ শ্রোতা ॥ সঙ্গীতশিল্পী মাসুদ আহমেদের গান আর বাচিকশিল্পী বেগম আক্তারী মমতাজের কবিতার যুগলবন্দীতে মুগ্ধ শ্রোতা। শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিল্পী মাসুদ আহমেদের গীত আধুনিক গানের একটি সিডির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জাদুঘর আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করেন কবি বাচিকশিল্পী বেগম আক্তারী মমতাজ।
×