স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সাহিত্যের রূপকার। অনুবাদক হিসেবেও ছিলেন সফল। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও ছিল তার সরব উপস্থিতি। চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন। মঞ্চে তার স্মরণীয় কীর্তি কাব্যনাটক। প্রতিভার বিচিত্র অঙ্গনে বিচরণকারী এই কীর্তিমান কবি ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক প্রয়াত হয়েছেন এক বছর হলো। মহান এই সাহিত্যস্রষ্টার প্রথম প্রয়াণবার্ষিকী ছিল বুধবার। এ উপলক্ষে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এদিন বিকেলে আয়োজন করা হয় স্মরণসভা। বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আলোচনায় অংশ নেন সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, কবি রুবি রহমান, স্থপতি-লেখক শাকুর মজিদ, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গনি এবং বর্তমান সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। সৈয়দ শামসুল হককে নিবেদিত স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি পিয়াস মজিদ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে আমার পরিচয় বিশ^বিদ্যালয় জীবনে। তবে এরপর দীর্ঘদিন তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল না। লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর মৃত্যুর আগের রাতেও তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
আনিসুজ্জামান বলেন, তিনি সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করেছেন। তিনি দুইটি ধারাকে ফিরিয়ে এনেছিলেন- দীর্ঘ্যকাব্যনাট্য ও কাব্যনাট্যধারা। তিনি তার সাহিত্য দিয়েই আমাদের মাঝে চিরজীবী থাকবেন।
আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, আজ শোকের দিন হলেও, শোক থেকে আমাদের উত্তরণ করতে হবে। জীবনের শক্তি আমাদের শোক করতে দেয় না। ৩০-৪০ বছর ধরে শুনে আসছি, তিনি কতবড় লেখক। কিন্তু তিনি আমার কাছে সহজ-সরল, বন্ধুপ্রাণ, শৌখিন এক মানুষ। রামেন্দু মজুমদার বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনের কতটা জুড়ে তিনি ছিলেন, সেটা আমরা গত এক বছরে বুঝতে পেরেছি। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব, দেশের কাব্যনাট্যকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি প্রমাণ করেছিলেন কাব্যনাট্য যদি সঠিকভাবে লেখা যায় এবং ভালভাবে নির্দেশিত হয়, তাহলে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারে। নাট্যাঙ্গনে আরেকটি কারণে চির আসন পাবেন, সেটা হলো শেক্সপিয়রের গুরুত্বপূর্ণ নাটকগুলোর অনুবাদ।
হাসনাত আবদুল হাই বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্প-সাহিত্যের এমন কোন শাখা নেই, যেখানে বিচরণ করেননি। কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথের পরে স্বীকৃতি ও স্মরণীয় হয়ে আছেন। তাদের পরেই অবস্থানটি সৈয়দ শামসুল হক। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানেই সফল হয়েছেন। শুধুমাত্র চিত্রকলার ক্ষেত্রে তিনি কোন প্রতিযোগিতায় নামেননি। তিনি চিত্রকর্ম করেছিলেন নিজের মনের মতো করে। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন সৈয়দ শামসুল হক।
শিল্পকলায় সময় নাট্যদলের নতুন নাটক ‘যযাতি’ মঞ্চস্থ
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় সময় নাট্যদলের নতুন নাটক ‘যযাতি’। গিরিশ কারনাডের লেখা নাটকটি ভাষান্তর করেছেন সলিল চৌধুরী, নির্দেশনা দিয়েছেন আকতারুজ্জামান। পঙ্কজ নিনাদের মঞ্চ পরিকল্পনায় নাটকটির আবহসঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইউসুফ হাসান। পোশাক পরিকল্পনা করেছেন মানসুরা আক্তার এবং আলোক পরিকল্পনা করেছেন আলমগীর হোসেন। সময় নাট্যদলের এটি ৩০ তম প্রযোজনা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফকরুল ইসলাম, রুমা, মানসুরা আক্তার, আব্দুল্লাহেল বারী, সুনিতা বড়ুয়া ও ইশরাত নিগার।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: