ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগ উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সংযোগ উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্প খরচে উন্নতমানের নিরবছিন্ন ইন্টারনেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। এ ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) মাধ্যমে ১৫শ’ গিগাবাইট পার সেকেন্ড ডাটা আদান-প্রদান সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাবমেরিন কেবল (এসএমডব্লিউ-৫) এবং এর ল্যান্ডিং স্টেশন উদ্বোধন করেন। খবর বাসস’র। তিনি দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ’৯৬ সালে তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশকে ডিজিটালাইজড করার যে পদক্ষেপ শুরু করেছিল, এর মাধ্যমে তার একটি ধাপ পূর্ণ হলো। শেখ হাসিনা বলেন, বিনা খরচে বাংলাদেশ আইআইজির সঙ্গে যুক্ত হতে ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালে দুবার সুযোগ পেয়েছিল। তবে বিএনপি সরকার দেশের ‘তথ্য ফাঁস’ হয়ে যাবে এ অজুহাতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। একটি অদক্ষ সরকারের অধীনে দেশ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এটি তার সেরা নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল উন্নত ও দ্রুততর ইন্টারনেট সংযোগ পেতে জনগণের জন্য সহায়ক হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের পর উপযুক্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে দেশ গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় এমনকি স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও বাংলাদেশ প্রত্যাশিত উন্নয়ন লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন, স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা শহরের একটি ক্ষুদ্র অংশ বাদে গোটা দেশ ১৯৯৬ সালে এ্যানালগ টেলিফোন সিস্টেমের আওতায় ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গোটা দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দীর্ঘসময় ধরে উপেক্ষিত এলাকা হিসেবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। পরবর্তী সরকারগুলোর উপেক্ষার কারণে একদা দেশের ‘খাদ্যভা-ার’ হিসেবে পরিচিত এ অঞ্চলের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমান সরকার এ অঞ্চলের উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দেয়ায় এখন এ অঞ্চল হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাচ্ছে। তার সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুরক্ষায় জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে সাংবিধানিক সরকারের ধারাবাহিকতা ছাড়া দেশকে বর্তমান উন্নয়নের পথে নিয়ে আসা সম্ভব হতো না। এ সময় প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালী জেলায় এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছেÑ কলাপাড়া সদর থেকে টিয়াখালী ঘাট বাজার ১৭৫ মিটার দীর্ঘ সেতু, রাঙ্গাবালী উপজেলা কমপ্লেক্স এবং কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক ভবনের সম্প্রসারণ। এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, চীফ হুইপ এএসএম ফিরোজ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম এবং ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং উর্ধতন কর্মকর্তারা গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা মাহবুবুর রহমান এমপি এবং শাহজাহান মিয়া, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মাসুদুর রহমান এবং সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী অনেক মানুষ পটুয়াখালী থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ভারতের ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহে দুটি বিদ্যুত কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এ বিদ্যুত দেশের ১০টি উপজেলা এবং কিছু প্রকল্পে শতভাগ বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
×