ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ওবায়দুল কাদের বলেছেন অপপ্রয়োগ হচ্ছে বেশি ;###;মামলা করার আগে পুলিশ সদর দফতরের পরামর্শ নিতে বললেন আইজি ;###;ছয় মাসে মামলা বেড়েছে দ্বিগুণ

ক্রমেই বাড়ছে দাবি, পালিত হচ্ছে কর্মসূচী ॥ বাতিল হোক ৫৭ ধারা

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৩ আগস্ট ২০১৭

ক্রমেই বাড়ছে দাবি, পালিত হচ্ছে কর্মসূচী ॥ বাতিল হোক ৫৭ ধারা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে ফুঁসে উঠছে সর্বস্তরের মানুষ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনের এই ধারা বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ থেকে বিভিন্ন মহল থেকে এ ধারা বাতিলের জন্য ইতোমধ্যে দাবি উঠেছে। যদিও ৫৭ ধারা নিয়ে গত এক সপ্তাহে নানামুখী ব্যাখ্যা এসেছে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মুখ থেকে। তবুও পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোন উন্নতি হয়নি। মামলা, গ্রেফতার, হয়রানি অব্যাহত। এমন বাস্তবতায় সর্বশেষ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের চেয়ে অপপ্রয়োগ বন্ধ করা জরুরী। এজন্য তিনি তথ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন। এদিকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করার আগে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার পরামর্শ নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক শহিদুল হক। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের অপপ্রয়োগ বেশি হওয়ায় মানুষ এর বিরোধিতা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা ও প্রতিশোধ নিতে আইনের এই ধারা প্রয়োগ করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোন নিউজ লাইক দিলেও মামলা করা হচ্ছে। হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিউজ শেয়ার হলেও অনেক ক্ষেত্রে কিছু বলা হচ্ছে না। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বারবার সংবাদ মাধ্যমে ৫৭ ধারা বাতিল হচ্ছে জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু গত প্রায় ১৫দিন ধরে এ ব্যাপারে সরকারের মনোভাব একেবারেই উল্টো। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে অনেক মন্ত্রী ৫৭ ধারা বহাল রাখার ব্যাপারে সায় দিয়েছেন। জানা গেছে, গত ছয় মাসের ব্যবধানে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই ৫৭ ধারায়। এই সময়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা হয়েছে। ছয় মাসে মামলার সংখ্যা ৩৯১টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৭৮৫। যাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৩১৩ জনকে। এ বিষয়ে তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ধারা প্রত্যাহারের পক্ষে। এই আইন করা হয়েছিল মানুষ যেন নিরাপদে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু আইনটি করার সময় প্রণয়নকারীরা অতি আবেগপ্রবণ হয়ে ধারাটিকে জামিন অযোগ্য করেছেন। অতিরিক্ত কঠোর হওয়ার কারণে এটির অপপ্রয়োগ বেশি হচ্ছে। এদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের চেয়ে অপপ্রয়োগ বন্ধ করা জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের। এ ব্যাপারে তিনি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বুধবার রাজধানীতে মেট্রোরেল স্টেশন ও উড়ালপথ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। সম্প্রতি ৫৭ ধারায় সাংবাদিকরা বেশি মামলা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এক জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বিচারকের ট্রেনে ওঠার কাহিনী লেখায়। সর্বশেষ খুলনায় ছাগলের মৃত্যু সংবাদে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ছবি জুড়ে দেয়ায় ৫৭ ধারার মামলায় মঙ্গলবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় এক সাংবাদিককে। বুধবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ওই সাংবাদিক। খুলনার সাংবাদিক আবদুল লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তুচ্ছ কিছু ঘটল আর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হলো, এটি ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ। এ ধারা বাতিলের চেয়ে এর অপপ্রয়োগ বন্ধ করা দরকার। এ জন্য তথ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করা উচিত। ওবায়দুল কাদের বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫৭ ধারা করা হয়েছিল। কিন্তু তুচ্ছ কারণে এর অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। খুলনায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। আইনের ৫৭ ধারায় সবচেয়ে বেশি গ্রেফতার বা হয়রানির শিকার হচ্ছে সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় সাংবাদিক নেতারাও প্রতিবাদ করে আসছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দ এই ধারা বাতিলের দাবিতে কর্মসূচী পালন করেছেন। সর্বশেষে টিভি চ্যানেল মালিক ও সংবাদপত্র মালিকদের পক্ষ থেকে এ ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। যদিও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ঘুরিয়েফিরিয়ে এই আইনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সর্বশেষ বলেছেন, ডিজিটাল সুরক্ষা আইন নামে নতুন আইন শীঘ্রই পাস হবে। তখন এ সমস্যা মিটে যাবে। জানা গেছে, আইসিটি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা প্রস্তাবিত ডিজিটাল সুরক্ষা আইনের ১৯ ধারায় থাকছে। তবে ডিজিটাল সুরক্ষা আইনের খসড়ায় এই বিষয়ে সাজা কমানো এবং মামলাটি জামিনযোগ্য করার প্রস্তাব রয়েছে। ৫৭ ধারা সম্পর্কে জাতীয় সংসদে ও মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেয়া বক্তব্য এবং বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। বাংলাদেশের আইসিটি আইন প্রণীত হয় ভারতের ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যাক্টের আদলে। ভারতের ওই আইনে ৬৬(এ) ধারাটি ছিল বাংলাদেশের ৫৭ ধারার মতো। ভারতের সুপ্রীমকোর্ট ওই ধারাটি বাতিল করে দিলেও বাংলাদেশে আদতে তা বাতিল হবে কিনা, হলেও অন্য আইনে থেকে যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের। আইনে কি আছে? আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার কারণে মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্য দিয়ে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি দেয়া হয়, তাহলে এই কাজ হবে একটি অপরাধ? কোন ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর এবং সর্বনিম্ন ৭ বছরের কারাদ-ে দ-িত হবেন এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদ-ে দ-িত হবেন। মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, আইনে যে শব্দগুচ্ছকে অপরাধ বলা হয়েছে সেগুলোর কোন সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। ২০১৩ সালে সংশোধনী যুক্ত করে অপরাধগুলোকে আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য করা হয়েছে। শাস্তির পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। সে জন্য এটির অপব্যহার বেশি হচ্ছে। এই আইনে মিথ্যা ও অশ্লীল, নীতিভ্রষ্টতা বা অসৎ, মানহানি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি এই সাতটি শব্দকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, আইনে প্রতিটি শব্দের ব্যাখ্যা থাকা দরকার। আইন প্রয়োগকারীদের মধ্যে সুযোগসন্ধানী যারা তারা এটির আরও বেশি অপপ্রয়োগ করে। এ কারণে আইনের যে দুর্বলতা আছে, সেগুলো দ্রুত শোধরানো দরকার। নইলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুযোগ থেকে যাবে। ৫৭ ধারায় অপরাধ আমলযোগ্য হওয়ায় আসামিকে গ্রেফতারের আগে পুলিশকে আদালতের পরোয়ানা দেখাতে হচ্ছে না। তা ছাড়া ২০০৬ সালের আইনে সর্বনিম্ন কারাদ-ের সময়সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। আগে কোন কারণে কারও মানহানি হলে কতটা মানহানি হয়েছে, সেটা আদালত নির্ধারণ করতেন, সে অনুযায়ী শাস্তি হতো। কিন্তু সংশোধনী যুক্ত হওয়ায় কারও বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে কমপক্ষে সাত বছর সাজা খাটতেই হবে। অবশ্য পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মোঃ মহসীন বলেছেন, যেকোন মামলার ক্ষেত্রেই গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা হলেও একই পন্থা অনুসরণ করা হয়। কয়েকটি আলোচিত ঘটনা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলায় খুলনায় এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় সোমবার রাত আড়াইটার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের বাসা থেকে ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়। সাংবাদিকের নাম আব্দুল লতিফ মোড়ল। তিনি খুলনার স্থানীয় দৈনিক প্রবাহের ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি। ডুমুরিয়া থানার পুলিশ জানায়, সুব্রত ফৌজদার নামের এক ব্যক্তি লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলাটি করেন। পরে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সুব্রত নিজেও একজন সাংবাদিক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, গত ২৯ জুলাই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার নিজ এলাকা ডুমুরিয়ায় কয়েক দুস্থ ব্যক্তির মাঝে হাঁস, মুরগি ও ছাগল বিতরণ করেন। জুলফিকার আলী নামের এক ব্যক্তির পাওয়া ছাগল এদিন রাতে মারা যায় বলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই খবর ফেসবুকে শেয়ার করার অভিযোগে লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন সুব্রত। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রসরাজ দাস আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অন্যতম শিকার। গত বছরের ২৯ অক্টোবর ফেসবুক ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তখন ওই জেলার নাসিরনগরে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ফরেনসিক ল্যাবে রসরাজের মুঠোফোন, মেমোরি কার্ড ও সিম কার্ড পরীক্ষা করে দেখা হয়। ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত দেন, ফেসবুকে রসরাজ দাস এমন কোন পোস্ট দেননি। কিন্তু তার আগেই রসরাজকে তিন মাস জেল খাটতে হয়। পরে জামিনে মুক্তির পর আবারও পুরনো মাছ ধরার পেশায় ফিরে গেছেন রসরাজ দাস। প্রয়োজন ছাড়া আর বাড়ি থেকে ভয়ে বের হন না। গত ১৩ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন একই বিভাগের অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি নিয়ে শিক্ষকদের দুই দলের মধ্যে বিরোধকে ঘিরে লেখালেখির জেরে মামলাটি হয়। আইজিপির নির্দেশনা তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করার আগে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার পরামর্শ নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বুধবার পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত উর্ধতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহসান বলেন, ‘পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে দেশে ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই সময় কর্মকর্তাদের আইজিপি নির্দেশনা দেন যে, ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করতে হলে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার পরামর্শ নিতে হবে।’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই কর্মকর্তা আরও জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতর থেকে সারাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের কিছু নির্দেশনা দিয়ে আইজিপি স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ ধারায় মামলা করতে হলে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হবে। এর মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর ৫৭ ধারায় সংঘটিত অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রুজুর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অভিযোগ সম্পর্কে কোনরূপ সন্দেহের উদ্রেক হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করতে হবে।’ এছাড়া বলা হয়, মামলা রুজুর আগে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার সঙ্গে আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং কোন নিরীহ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে হবে। এমতাবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় বর্ণিত অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রুজুর আগে উপরোক্ত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
×