ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান আনোয়ারা

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৩০ জুলাই ২০১৭

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান আনোয়ারা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী আনোয়ারা এখন চরম দুঃসময়ের মুখোমুখি। অর্থাভাবে তার অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা স্বামী মহিতুল ইসলাম এখন মৃত্যু পথযাত্রী। চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোও তার পাশে নেই। প্রযোজকদের কাছে পাওনা টাকা চেয়েও পাচ্ছেন না। এমনকি ধার নেয়া অর্থও কেউ ফেরত দিচ্ছে না। প্রচ- অর্থ সঙ্কটে ভুগছেন তিনি। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দেশের এই গুণী অভিনেত্রী। এই অবস্থায় অসহায় এই অভিনেত্রী তার স্বামীকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন। জানা যায় আনোয়ারার স্বামী মহিতুল ইসলাম গত ১৩ জুলাই স্ট্রোক করেন। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। আনোয়ারা বলেন, আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আমার কাছে এত টাকা নেই। আগারগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে ডা. দীন মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে তার স্বামীর চিকিৎসা চলছে। আনোয়ারা বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই শিল্পীদের পাশে থাকেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ, আমার স্বামীকে বাঁচান, আমাকে এই দুঃসহ অবস্থা থেকে উদ্ধার করুন। আনোয়ারা বলেন, শিল্পী ঐক্যজোটের সভাপতি অভিনেতা ডি এ তায়েব ও সাধারণ সম্পাদক নাট্য নির্মাতা জি এম সৈকত তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে তাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। তাই এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। আনোয়ারার বাবা জামাল উদ্দিন, মা ফরিদুন্নেসা। বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। স্বামী মহিতুল ইসলাম। এক মেয়ে মুক্তি আর নাতনি কারিমা ইসলাম দরদী। আনোয়ারা বর্তমানে বনশ্রীতে থাকেন। দেশীয় চলচ্চিত্রের দুর্দিন শুরু হওয়ার পর থেকেই আনোয়ারার মতো প্রখ্যাত অভিনেত্রীরা বেকার হয়ে পড়তে থাকেন। সিনেমা হল কমছে, একই সঙ্গে সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে হাতে গোনা। যা হচ্ছে তাতে আবার মানের অভাব। এসব কারণে আনোয়ারার মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা আজ কাজের অভাবে মানবেতর জীবনের মুখোমুখি। পরিবার নিয়ে দুঃসহ দিন কাটাচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন চলচ্চিত্রবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই চলচ্চিত্র শিল্প ও শিল্পীদের এই দুরবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারেন। প্রসঙ্গত, আনোয়ারা নৃত্যশিল্পী থেকে চরিত্রাভিনেত্রী হয়েছেন। ১৪-১৫ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। নায়িকা হিসেবে তিনি ১৯৬৭ সালে সৈয়দ আউয়াল ও শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘বালা’ নামের উর্দু চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। অভিনেত্রী হিসেবে আনোয়ারার টার্নিং পয়েন্ট একই বছর মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। ওই চলচ্চিত্রে আলেয়া চরিত্রে অভিনয় করে সর্ব শ্রেণীর দর্শকের কাছে প্রশংসিত হোন। ১৯৮২ সালে তিনি চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে ‘চন্দ্রমুখী’ চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ‘শুভদা’, ‘রাধা কৃষ্ণ’ ও ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে মায়ের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন সর্বোচ্চ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ পর্যন্ত তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আনোয়ারা সর্বশেষ বছর দুয়েক আগে জাহাঙ্গীর আলম সুমনের নির্দেশনায় ‘সোনা বন্ধু’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি আগামী ঈদ উল আযহায় মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে।
×