ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন নিয়ে কার্ডিফে মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৭ জুন ২০১৭

স্বপ্ন নিয়ে কার্ডিফে মাশরাফিরা

কার্ডিফ মানেই প্রেরণা। কার্ডিফ মানেই আশা। কার্ডিফ মানেই যেন বাংলাদেশের কাছে সুখস্মৃতি। এই কার্ডিফেই এবার বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্র্রফিতে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি খেলবে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। যে দলটিকে সোমবার হারাতে পারলেই হয়ত সেমিফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। এই সেমিতে খেলার স্বপ্ন নিয়েই এখন কার্ডিফে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মঙ্গলবারই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি শেষ হতেই সবার ভেতর একটা স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি দেয়। যেটি অনেক বড় স্বপ্ন। সেটি কী? নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর সেমিফাইনাল হয়ে ফাইনালে গিয়ে শিরোপা জেতার স্বপ্ন। যে স্বপ্ন বাস্তব নয়। তবে ইতিহাস আছে। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানও যে লীগ পর্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৭৪ রানে অলআউট হয়েও এভাবে বৃষ্টিতে এক পয়েন্ট পায়। এরআগে ৫টি ম্যাচে মাত্র ১টি জয় ছিল। যেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক পয়েন্ট মিলল, সেই এক পয়েন্টই পাকিস্তানকে সেমিফাইনালে তুলল। সেমিফাইনালে জিতে, ফাইনালে জিতে; শিরোপা প্রথমবারের মতো জিতল পাকিস্তান। বাংলাদেশকে নিয়েও এমন কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তখনকার পাকিস্তান দল প্রতাপশালী ছিল। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দলও ছিল। অধিনায়ক ইমরান খান তো ক্ষমতাধর ক্রিকেটারই ছিলেন। দলটি সুযোগ পেয়েছে। তা কাজেও লাগিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ কী এমন সুযোগ এভাবে কাজে লাগাতে পারবে? শিরোপা জেতার স্বপ্ন তাই বাদ দিতে হবে। এটি বাস্তব নয়। ফাইনালে খেলার আশাও বাদ দিতে হবে। যদিও সেমিফাইনালে উঠলে এরপর দুটি ম্যাচ জিতলেই তো হয়। কিন্তু এমন ভাবনা তো আর বাস্তব নয়। তাই ভাবনা বাদ দিতে হবে। যেটি এখন ভাবার বিষয় সেটি হচ্ছে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখতেই পারে। এ স্বপ্ন বাস্তব হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তা অনেকটা সহজ হিসেবেই দাঁড়িয়ে আছে। ইংল্যান্ড যদি সব ম্যাচ জিতে। বাংলাদেশ যদি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে। তাহলেই হয়ে যাবে। ইংল্যান্ডকে যদি নিউজিল্যান্ড হারিয়ে দেয়, অস্ট্রেলিয়া যদি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে না জিতে এবং নিউজিল্যান্ডকে যদি বাংলাদেশ হারায়, তাহলে সম্ভব হতে পারে। তখন নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ সমান ৩ পয়েন্ট করে থাকবে। যাদের রানরেট বেশি থাকবে তারাই সেমিফাইনালে খেলবে। তাই এ স্বপ্ন দেখাই যায়। ২০০৫ সালে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সেই কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনেই খেলা। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। যে দলটিকে বাংলাদেশ সম্প্রতি হারিয়েছেও। আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি সিরিজেই হারিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বেশি খেলেছে বাংলাদেশ। জানাও আছে নিউজিল্যান্ডের শক্তি ও দুর্বলতা। তাই জেতার সম্ভাবনাও বেশি। তাইতো সবাই নিউজিল্যান্ডকে হারানোর দিকেই এখন মনোযোগী। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যেমন বলেছেন, ‘২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক পয়েন্ট পেয়েছি। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছি। এবারও সেই রকম সুযোগই মিলেছে। সেইসময় এক পয়েন্ট আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। আমরা নিউজিল্যান্ডকে হারাতে চাই। একটা ফল চাই। জানি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি কঠিন হবে। তবে আমরা যদি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল খেলতে পারি তাহলে সেমিফাইনালে জিততেও পারি।’ বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও নিউজিল্যান্ডকে হারাতে চান। বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে নেক্সট (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে) ম্যাচ জেতা। আমরা চেষ্টা করব আমাদের ম্যাচটা জিততে। ইংল্যান্ড আরও দুইটা জিতলে আরও অপশন আছে। নিউজিল্যান্ড জিতলেও চান্স আছে। সো অপশন অনেকই আছে। আমাদের কাজ হচ্ছে নেক্সট ম্যাচ আমাদের জেতা। তা নাহলে কোন অপশনেই কাজ হবে না। আমাদের এখনও চান্স থেকে গেল। এখানে আসলে কার কোন হাত নেই। সো হোপফুলি এই লাকটাই আমাদের কাজে আসবে।’ এখন ভাগ্য যেহেতু সহায় হয়েছে সেমিফাইনালে উঠতে পারলেই হলো। যে স্বপ্ন নিয়ে কার্ডিফে আছে বাংলাদেশ, সেই স্বপ্ন পূরণ হলেই হলো। পারবে বাংলাদেশ দল সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে?
×