ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পোশাক কর্মীকে পালাক্রমে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ॥ চার ধর্ষক গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৭ মে ২০১৭

পোশাক কর্মীকে পালাক্রমে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ॥ চার ধর্ষক গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেশ কদিন ধরেই পোশাককর্মী মেয়েটিকে অনুসরণ করছিল ধর্ষকরা। কিন্তু সময় সুযোগ পাচ্ছিল না। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালেই ধর্ষকরা ওঁৎ পেতে ছিল মেয়েটির রাস্তায়। সেখান থেকে তাকে তুলে নেয় আলমগীর, রিপন মাহমুদ খোকন ও ঝন্টু মিয়া। তারা একটি টিনশেড ঘরে আটকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রতিবার ধর্ষণের সময়ই সেটা ভিডিও করা হয়। বনানীর দুই তরুণীর ধর্ষণের মতোই এ চার ধর্ষকও ভিডিও দিয়ে মেয়েটিকে তাদের যৌনদাসি বানাতে চেয়েছিল। ধর্ষক আলমগীর নিজেকে সাভার আশুলিয়া এলাকার বড় ডাকাত হিসেবেও মেয়েটিকে পরিচয় দিয়ে হুমকি দেয়, ধর্ষণ ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও ফাঁস করে দেয়া হবে। তখন আর সমাজে থাকা সম্ভব হবে না। কিন্তু এ হুমকি উপেক্ষা করেই মেয়েটি সাহস করে র‌্যাবের কাছে নালিশ জানানোর পর ফাঁস হয়ে যায় এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা। চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে সাভারের আশুলিয়া থানার নয়ারহাট এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এ ধরনের তথ্য বেরিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালের এ ঘটনা আর বিকেলেই র‌্যাব তাদের আটক করে। এতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই ধর্ষকরা স্বীকার করে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের কাহিনী। এদের মধ্যে ধর্ষক আলমগীর একটি ডাকাতি মামলায় সাত বছরের কারাদ-াদেশপ্রাপ্ত। প্রথমে তাকে গাবতলী এলাকা থেকে আটকের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আলমগীর সাভারে পোশাক শ্রমিকদের একটি মেসের কেয়ারটেকার ছিলেন। সে সুবাদে সে ওই মেয়েটিকে বেশ কিছুদিন ধরেই অনুসরণ করে আসছিল। মেয়েটি কখন একাকী বাসায় ফিরত কখন গার্মেন্টেসে যেত সেটা রেকি করার পরই বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটিকে জোরপূর্বক একটি অটোরিক্সায় তুলে নেয়। র‌্যাব পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, আলমগীরের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া থেকে রিপন মাহমুদ (২৯), মোঃ খোকন (৩০) ও ঝন্টু মিয়াকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। একটি মোবাইল থেকে ধর্ষণের ভিডিও উদ্ধার করা হয়। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাব জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আশুলিয়ার ভাড়া বাসা হতে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈর যাওয়ার উদ্দেশে বের হন ওই নারী পোশাক শ্রমিক। এ সময় ভিকটিমের পথরোধ করেন ধর্ষকরা। এরপর জোরপূর্বক অটোরিক্সাতে করে ওই নারীকে ধামরাই থানাধীন ধুলিভিটা কাঁচা বাজারের কাছে একটি টিনশেডের কক্ষে নিয়ে যান তারা। সেখানে তারা ওই নারীকে উপর্যুপরি গণধর্ষণ করেন। এ সময় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়। ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করলে এবং ধর্ষকদের ২০ হাজার টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন ধর্ষকরা। এ সময় সেখান থেকে কৌশলে বের হয়ে র‌্যাব-৪-এর সাভার ক্যাম্পে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে ও একইদিন রাতে অভিযুক্ত ধর্ষকদের গ্রেফতার করা হয়। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর আলমগীর হোসেন তাকে ধর্ষণের ভিডিও করার কথা জানিয়ে বনানীর রেইনট্রি হোটেলের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়। যদি পুলিশকে জানানো হয় তাহলে ভিডিও ফাঁস করা হবে বলে হুমকি দেয়ার কথাও স্বীকার করেছে আলমগীর।
×