ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

অব্যবহৃত জমিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১০ মে ২০১৭

অব্যবহৃত জমিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, সব মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে সরকারী অব্যবহৃত জমি ও প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। যাতে করে সরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ও এর অব্যবহৃত জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। মঙ্গলবার রাজধানীর দিলকুশায় বিডা কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত এক সভা শেষে তিনি কথা বলেন। এর আগে গত ১৩ মার্চ নীতিমালাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার মতামত চেয়ে চিঠি দেয় বিডা। সভায় ওই চিঠির উত্তরে যেসব পরামর্শ এসেছে তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের ধারা ২৩(১) অনুযায়ী ‘সরকারী শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত জমি বা স্থাপনা বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের জন্য ব্যবহার সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালা-২০১৬’ এর আওতায় চলমান ও বন্ধ হয়ে যাওয়া মিলে দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শতাধিক শিল্পকারখানা ঘিরে বেশকিছু জমি এর মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আলোকে সরকারী অব্যবহৃত জমি ও প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্তকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মতামত চাওয়া হয়। বিডার জরিপে দেখা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১৫টি প্রতিষ্ঠানের ৩৬৪.২২ একর জমি পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ১১০.৯৩ একর জমি উদ্বৃত্ত রয়েছে। এর মধ্যে ২টি প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে, ১৩টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ৫টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৬টি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ৩টি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে প্রাথমিক জরিপে দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের ১৫১৬.৭৪ একর জমি উদ্বৃত্ত রয়েছে। এই ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল কর্পোরেশনের আওতাধীন (বিটিএমসি) ১৪টি, পাটকল কর্পোরেশনের ১টি, খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশনের ১০টি, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের ৪টি, বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প কর্পোরেশনের ৯টি, বাংলাদেশ রেশন শিল্প কর্পোরেশনের ১টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠান, চালু রয়েছে ১৮টি এবং আংশিকভাবে চালু রয়েছে ৩টি প্রতিষ্ঠান। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, বিডার প্রথম পরিচালনা পর্ষদে সরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক পড়ে থাকা অলস জমি নতুন শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজে লাগাতে একটি খসড়া বিধিমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংষ্টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে এই বিধিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। সভায় বিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতোপূর্বে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপনে যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, পরিকল্পনা অনুযায়ী এর ভূমির সবটুকু কাজে লাগেনি। অনেক শিল্প পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। আবার অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব অলস শিল্পাঞ্চলকে কাজে লাগাতে ইতোমধ্যেই জরিপ শুরু হয়েছে। আমিনুল বলেন, এতদিন আইনের বিধান ছিল না। এখন বিধান হয়ে গেলে এসব অলস ও অব্যবহৃত ভূমির সঠিক ব্যবহার হবে। বিডার পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিলুপ্ত প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের অধীনে থাকা ৩৬৪ দশমিক ২২ একর আয়তনের ১৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিডার অধীনে এসেছে। এর মধ্যে মাত্র দুটি চালু আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট অব্যবহৃত একশ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিডার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন, পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মতিউর রহমান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম, সেতু বিভাগের উপসচিব এসএম লাভলুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ কবিরুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সুরাইয়া পারভীন শেলী ও বেজার ব্যবস্থাপক সালেহ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
×