ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউর চোখে

হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক ইতিবাচক

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৯ মে ২০১৭

হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক ইতিবাচক

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ হেফাজত ইসলামের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্ককে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সরকারের এ দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ’ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদন। ইউরোপ দিবস উপলক্ষে সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, সমাজের বিভিন্ন অংশ, যারা হয়ত আড়ালেই থাকত, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ আমি মনে করি ইতিবাচক। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মায়াদন বলেন, হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে দেশের নাগরিক সমাজই বলতে পারবে। তবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ থাকা জরুরী। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ নির্ভর করে কিছু দীর্ঘমেয়াদী বিষয়ের ওপর, যেগুলো বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে। ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, সমাজের কোন অংশ, কোন পক্ষকেই দূরে সরিয়ে রাখা উচিত নয়। এর কার্যকারিতাও আমাদের দেখতে হবে। তবে আমি মনে করি, এটা (সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি) ইতিবাচক। মতবিনিময়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন মায়াদন। যুক্তরাজ্যে গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় আসার পরের বছর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে নজর ছিল সবার। কারণ ফ্রান্সেও একই শোর তুলেছিলেন কট্টর ডানপন্থী নেতা লো পেন। অভিবাসন বিরোধিতার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ফ্রান্সকে গুটিয়ে নেয়ারও ঘোষণা ছিল ন্যাশনাল ফ্রন্টের এই নেতার। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মধ্যপন্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। শেষ পর্যন্ত রবিবার রানঅফ ভোটে পেনকে পেছনে ফেলে ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নও স্বস্তি পেয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মায়াদন বলেন, ইইউ অনেক নমনীয় একটি প্রতিষ্ঠান। ইইউ প্রতিষ্ঠার আগেও এ ধরনের বিতর্ক ছিল। আমরা এতে অভ্যস্ত, একে গ্রহণ করি এবং স্বাগত জানাই। ইইউর নীতি বাস্তবায়নের পথ পুনর্গঠনে এটি আমাদের সহায়তা করে। ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের একটি ইতিবাচক অর্জন হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধার ফলে এখানে পোশাকশিল্প বেড়ে উঠেছে এবং কয়েক লাখ নারী দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কেরও প্রশংসা করেন মায়াদন। নিজের দেশ ফ্রান্সসহ অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, এখানে আমরা কখনও বন্ধ দরজার মুখোমুখি হইনি। আমরা যখনই সরকারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি আমাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। বরং কথা বলার জন্য কাউকে না কাউকে পেয়েছি, যিনি সবসময় আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
×