ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাহিত্যিক শান্তনু কায়সারকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

সাহিত্যিক শান্তনু কায়সারকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক অধ্যাপক শান্তনু কায়সার। বুধবার সকালে বাংলা একাডেমিতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা। পরে বাদ মাগরিব জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাচানামেঘ গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রাজধানীর মিরপুর-১৩ সেকশনে ভাইয়ের বাড়িতে, বাংলা একাডেমিতে ও কুমিল্লার টাউন হল ময়দানে তার তিন দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক শান্তনু কায়সার মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বুধবার সকালে প্রথমেই ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল থেকে অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর-১৩ সেকশনে ভাইয়ের বাড়িতে। সেখানে পরিবারের সদস্যরা তাকে শেষবারের মতো দেখতে ছুটে আসেন। এ সময় সৃষ্টি হয় আবেগঘন পরিবেশের। সেখানেই তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। একাডেমির নজরুল মঞ্চের সামনে অস্থায়ী বেদীতে শান্তনু কায়সারের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার শিক্ষক ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলা একাডেমির পক্ষে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী লাইসা আহমেদ লিসা, সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ, লেখক শিবিরের পক্ষে সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুর রহমান, কুমিল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সমতট’র পক্ষে শিল্পী মানসী সাধু, তপন দেবনাথ, কবি পিয়াস মজিদ, জাতীয় কবিতা পরিষদের পক্ষে আমিনুর রহমান সুলতান, সাহিত্য একাডেমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পক্ষে কবি মুজিবুল বারী, কথাসাহিত্যিক নুরুদ্দীন জাহাঙ্গীর, কবি শরাফত হোসেন প্রমুখ। এ সময় প্রয়াত শান্তনু কায়সারের পরিবারের পক্ষে জ্যেষ্ঠ পুত্র অদুদ রায়হান, সহোদর মুজিবুল হক, সিরাজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘শান্তনুর সাহিত্য সমাজের প্রতি অনুরাগ ছিল তীব্র। সমাজ পরিবর্তনের নানা আঙ্গিককে সে তুলে ধরত নান্দনিক ভঙ্গিতে। অন্যদের তুলনায় একটু কম পরিচিত হলেও সাহিত্যিক পরিম-লে তার অসাধারণ কাজ রয়েছে। জীবনানন্দ দাশ ও অদ্বৈত মল্লবর্মণকে নিয়ে তার অসাধারণ কিছু কাজ রয়েছে।’ নগরকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চায় ব্রতী না হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার মফস্বল এলাকাতে তিনি সাহিত্যচর্চাকে বেগবান করায় তার প্রশংসাও করেন প্রবীণ এই শিক্ষাবিদ। শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘লেখক হিসেবে অত্যন্ত শক্তিশালী ছিলেন তিনি। তার প্রতিটি লেখাতেই আমরা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের ছাপ দেখতে পাই। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখার জন্য চট করে কাউকে খুঁজে পেতাম না। তখন শান্তনু কায়সার এগিয়ে আসতেন। চট করে দারুণ লেখাটা খুব বিস্ময়কর লাগত। তার মতো লেখক জন্মান না যুগে যুগে।’
×