ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রো ট্রেনে হামলার নিন্দায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ

সন্দেহভাজন হামলাকারী চিহ্নিত

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৫ এপ্রিল ২০১৭

সন্দেহভাজন হামলাকারী চিহ্নিত

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রো ট্রেনে সোমবার বোমা হামলার ঘটনার পিছনে কিরগিজস্তানের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী হিসেবে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৪ তে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় তিন দিনের শোক পালন করছে রাশিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার পাশে রয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। রাশিয়ায় সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রো স্টেশনে বিস্ফোরণকে ‘ভয়ানক ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিস্ফোরণের খবর পেয়ে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠান চলাকালে সোমবার তিনি এমন মন্তব্য করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। জানা গেছে সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রোর সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলাকারী আকবারজন দিজালিলভ। ১৯৯৫ সালে কিরগিজস্তানে তার জন্ম হয়। সম্ভবত তার রুশ নাগরিকত্ব ছিল। বিস্ফোরণের দায় তাৎক্ষণিক কেউ দাবি করেনি। সিরিয়ায় জিহাদিদের বিরুদ্ধে রুশ সামরিক বহিনীর হস্তক্ষেপের জন্য পাল্টা জবাবে রাশিয়ায় হামলা চালানোর আহ্বান করে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এর পরেই হামলার ঘটনাটি ঘটে। রাশিয়ার এফএসবির ইন্টিলিজেন্স সার্ভিসের মতে, ২৯০০ রুশ নাগরিকসহ সাবেক সোভিয়েত দেশগুলো থেকে অন্তত সাত হাজার নাগরিক সিরিয়া ও ইরাকে জিহাদি গ্রুপে যোগ দেয়। এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি বলেছেন, উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার দেশ রাশিয়ার পাশে রয়েছে। হামলার কারণ অবশ্য এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের কথা জানানো হলো। ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøলাদিমির পুতিন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, তদন্তই সব বলবে। সম্ভাব্য সবদিক মাথায় রেখে তদন্ত চালাব আমরা। তবে শুরুতেই আমরা দেখতে চাইব, হামলাটি সন্ত্রাসবাদী ধাঁচের কিনা। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক জানিয়েছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়েলদ্রিম। এ সময় তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। এ বিস্ফোরণের ঘটনায় টুইটারে দেয়া এক পোস্টে নিহতদের প্রিয়জন এবং রাশিয়ার জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। সোমবারের ওই হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৫ জন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, বিস্ফোরণের কারণ খুঁজছে রাশিয়া। প্রাথমিকভাবে একে ‘জঙ্গী হামলা’ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ। হামলার পর স্থানীয় গবর্নর অফিস থেকে বলা হয়েছিল, এ ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছে। তবে এর কিছুক্ষণ পরে এক বিবৃতিতে রাশিয়ার ন্যাশনাল এ্যান্টি-টেরোরিজম কমিটি (এনএসি) জানায়, সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রো বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯ জন নিহত ও ২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। আহতদের কারও কারও অবস্থা গুরুতর। আহতদের সবাইকে জরুরী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওই বিস্ফোরণে ৪৭ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। সর্বশেষ বিবিসি ও স্পুটনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। ন্যাশনাল এ্যান্টি-টেরোরিজম কমিটি (এনএসি) দাবি করেছে, ‘অচেনা বিস্ফোরক’ ব্যবহৃত হয়েছে রেল স্টেশনের ওই বিস্ফোরণ ঘটাতে। তারা জানিয়েছে, সোমবার ট্রেনটি যখন সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রোর তেখনোলোজিচেস্কি ইনস্টিটিউট এবং সেনায়া প্লোশচাদের মধ্যকার স্টেশনগুলোতে চলাচল করছিল তখন ওই বিস্ফোরণ হয়। এনএসি বলেছে, সেন্ট পিটার্সবার্গ সিস্টেমের অপর এক স্টেশনে আরেকটি গণবিধ্বংসী বিস্ফোরক পাওয়া গেছে অবিস্ফোরিত অবস্থায়। এই প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পেছনকার সম্ভাব্য সব কারণ খুঁজে দেখা হবে। তবে সবার আগে বিবেচনা করা হবে, হামলাটি জঙ্গী হামলা কিনা। এক বিবৃতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদসহ সম্ভাব্য সব কারণ মাথায় রেখে তদন্ত চলবে। ভøাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, ঘটনার সময় পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গেই ছিলেন। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেনকোর সঙ্গে বৈঠক করতে তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গ যান। সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রো স্টেশনে বিস্ফোরণকে কারণ দেখিয়ে দেশটিতে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার রাশিয়ায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এ ভ্রমণ সতর্কতা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, মার্কিন নাগরিকদের বিস্ফোরণের এলাকাগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
×