ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দশমিনায় বাঁধ নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৩১ মার্চ ২০১৭

দশমিনায় বাঁধ নিয়ে শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ দশমিনা উপজেলায় তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পাড়ের মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। সতেরো কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার বাঁধ ব্লক বসিয়ে টেকসই করা হচ্ছে। অথচ বাকি সাড়ে বারো কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে। এতেই এ শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, অরক্ষিত অংশ বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে আনতে পারে। এলাকাবাসীর আশঙ্কার সত্যতা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বরাদ্দ পাওয়া গেলে অরক্ষিত অংশেও ব্লক বসানো হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সামুদ্রিক ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, প্লাবনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘ইমার্জেন্সি সাইক্লোন রিস্টেশন ও রিহাবলেটেশন প্রজেক্ট-২০০৭’ এর আওতায় দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়। ২০১৫ সালে দরপত্রের মাধ্যমে নির্মাণ কাজের জন্য দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইএল এবং ভারতীয় এমবিএলকে যৌথভাবে কার্যাদেশ দেয়া হয়। এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়। পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কেএম হুদা জানান, এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে দশমিনা উপজেলা সদর ইউনিয়নের হাজিরহাট থেকে রনগোপালদি ইউনিয়নের দক্ষিণ রনগোপালদি পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৯৩০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত। এ বেড়িবাঁধের মেরামত-সংস্কার ছাড়াও ৬ দশমিক ৩৬৫ কিলোমিটার সম্পূর্ণ নতুন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া বাঁধের দশমিনার তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী সৈয়দজাফর গ্রাম, আউলিয়াপুর ও রনগোপালদির চরঘূর্ণি গ্রাম এ তিনটি অংশের ৪ দশমিক ৫৫০ কিলোমিটার এলাকায় ব্লক বসিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এর বাইরে এ প্রকল্পে পানি নিষ্কাশনের জন্য নয়টি নতুন স্লুইস গেট নির্মাণ ও পুরাতন পাটি মেরামত কাজ রয়েছে। চলতি বছর জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বাঁধে ব্লক বসিয়ে টেকসই করার কাজে ব্যয় হবে ৪২ কোটি টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান লিটু বলেন, প্রকল্প অনুযায়ী বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ চলছে। ব্লক নির্মাণসহ বাঁধে ব্লক বসানোর কাজও পুরোদমে চলছে। আগামী জুন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। এদিকে সরেজমিনে দশমিনার রনগোপালদি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে চলছে বাঁধ নির্মাণ কাজ। এলাকাবাসীর আতঙ্কের বিষয়টি স্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, আসলে প্রকল্প অনুযায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট পয়েন্টে ব্লক বসিয়ে টেকসই করা হচ্ছে। তবে বেড়িবাঁধের সম্পূর্ণ অংশে ব্লক বসানো হলে বাঁধটি আরও টেকসই হতো। অর্থ বরাদ্দ হলে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
×