ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অভিযোগ ঢাবি ভিসির

খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৫ মার্চ ২০১৭

খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, খাতা না দেখেই চূড়ান্ত ফল দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে তাদের শিক্ষার মান কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ঢাবি উপাচার্য আরও বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের আত্মীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। তিনি একবার অনার্সের খাতা নিলেও অসুস্থতার কারণে দেখতে পারেননি। তাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানান, দ্রুত যেন খাতা নিয়ে যাওয়া হয়। তার দ্বারা খাতা দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসখানেক পার হলেও কেউ খাতার বিষয়ে খোঁজ নেয়নি। এর কিছুদিন পরেই ফলাফল দিয়ে দেয়া হয়। অথচ তখন অদেখা অবস্থায় কয়েক শ’ খাতা ওই শিক্ষকের বাসায় পড়ে ছিল। এই হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার অবস্থা। মঙ্গলবার রাজধানীর সরকারী তিতুমীর কলেজে শিক্ষক পরিষদ মিলনায়তনে মানসম্মত শিক্ষা, বিরাজমান সমস্যা ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু হায়দার আহমেদ নাছেরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ এনামুল হক খান, প্রফেসর ডালিয়া আহমেদ, প্রফেসর মোঃ আশরাফ হোসেন প্রমুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শিক্ষার মানের কোন শেষ নেই। তিতুমীর কলেজের প্রধান সমস্যা শ্রেণীকক্ষ সঙ্কট, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রধান সমস্যা একই। স্থানের সমস্যা আমাদের জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আমরা করব। কিন্তু এর মধ্যেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের নির্দেশে সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়েছে। এখন আমরা এই কলেজগুলোতে গুণগত পরিবর্তন দেখতে চাই। এজন্য আমাদের যা করণীয় তা করব। তবে শিক্ষকদের সদিচ্ছার অভাবই মানসম্মত শিক্ষার সবচেয়ে বড় অন্তরায়। তিতুমীর কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, ঘরে ঘরে উচ্চশিক্ষার কনসেপ্টে আমি বিশ্বাসী নই। উচ্চশিক্ষা হওয়া উচিত নির্বাচিত কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য। আর সবার উচ্চশিক্ষা ধারণ করারও যোগ্যতা নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণে এখন এইচএসসি পাস করলে যে কেউ অনার্সে ভর্তি হতে পারে। টিনের চাল নেই এমন কলেজেও অনার্স কোর্স রয়েছে। এই অবস্থা হলে কোনভাবেই মান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। উচ্চশিক্ষার অবস্থা এমনই যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর চেয়েও অনার্সে পাস করা সহজ। সেমিনারে কলেজের চারটি অনুষদ থেকে মানসম্মত শিক্ষার অন্তরায় হিসেবে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরা হয়। সেখানে শ্রেণীকক্ষ সমস্যা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের ভারসাম্যহীনতা, শিক্ষক প্রশিক্ষণের অভাব, গবেষণাহীন উচ্চশিক্ষা, কারিকুলামের দুর্বলতাসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ইউজিসি’র সঙ্গে জাতিসংঘ বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী ॥ দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে জাতিসংঘ বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নানের সঙ্গে তাঁর দফতরে সাক্ষাতকালে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল। ইউজিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ইউএন উমেন এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ক্রিসচিন হানটার ইউজিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ আগ্রহের কথা জানান। এ সময় ইউজিসির সচিব ড. মোঃ খালেদ ছাড়াও ইউএন উমেনের মাহতাবুল হাকিম উপস্থিত ছিলেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান তাঁর দফতরে ক্রিসচিন হানটারকে স্বাগত জানান এবং যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সম্পর্কে ইউজিসি ও বাংলাদেশ সরকানের নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, যৌন হয়রানি সমস্যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের সমস্যা নয়, বরং বিশ^ব্যাপী এক সমস্যা। যৌন হয়রানি সারা বিশে^ ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত হয়। চেয়ারম্যান বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধের উত্তম পন্থা সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা। বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ^বিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ইউজিসি একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
×