ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যায় জর্জরিত কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১১ মার্চ ২০১৭

সমস্যায় জর্জরিত কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, নানা দুর্বলতার কারণে স্কুলটির শিক্ষার মান তলানিতে এসে ঠেকেছে। স্কুলের মেধাবী ছাত্রীরা স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষায় ২৪ জন ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১১ জন। অথচ পরীক্ষা দিয়েছিল ২ শ’ জন। অভিভাবকরা বলছেন, একসময় কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি শুধু কুড়িগ্রামে নয় সারা উওরাঞ্চলের মধ্যে শীর্ষ স্থানীয় স্কুল ছিল। প্রতি বছর অর্ধশতাধিক ছাত্রী জিপিএ-৫ পেত। পঞ্চম আর অষ্টম শ্রেণীতে ১০ থেকে ১৫ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বোর্ডের বৃত্তি পেত। অথচ বর্তমানে এসব ফলাফল শূন্যের কোচায় নেমে এসেছে। অন্যদিকে বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিজের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য স্কুল কমিটির কাছে আবেদন করলে কমিটি তা বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতা বলে কমিটির গুটিকয়েক সদস্যের যোগসাজশে নির্বাচিত কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে এ্যাডহক কমিটি গঠনের পাঁয়তারা করছেন। এ নিয়ে স্কুলের কয়েক প্রভাবশালী সদস্য নিরীহ সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। স্কুলের কয়েক শিক্ষক-শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রধান শিক্ষক হাজেরা বেগম স্কুলের মাত্র তিন থেকে চার শিক্ষক ছাড়া সকল শিক্ষক এবং কর্মচারীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তার আচরণের কারণ সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা শিক্ষা দেয়ার মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের প্রশাসনিক দুর্বলতা, অদক্ষতা এবং অব্যবস্থার কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিম্নগামী। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক স্কুল সরকারীকরণের কথা বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলেছেন। স্কুলে হয় না আয়-ব্যয়ের হিসাব। স্কুলের টাকা বিল ভাওচারের মাধ্যমে আত্মসাত করারও অভিযোগ রয়েছে। স্কুলের অভিভাবক আবুল বাশার জানান, কয়েক মাসের মধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মেয়াদ শেষ হবে। নানা অনিয়মের পর আবারও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন। কুড়িগ্রাম বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি আহমেদ সুলতানা নাজলি বেগম জানান, প্রধান শিক্ষকের হিসেবের গরমিলের কারণে হিসাব ঠিকমতো দিতে পারছেন না। তিনি এককভাবে চাকরির মেয়াদ বর্ধিত করণের চেষ্টা করছেন। এতে আমি বাধা দেয়ায় তার সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা হাজেরা বেগম জানান, আমি কোন অনিয়ম করিনি। দিনে দিনে স্কুলের ফলাফল আরও ভাল হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়।
×