ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেইনওয়াটার হার্ভেস্টিং সম্মেলনে বক্তারা

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা গেলে বন্যা এড়ানো সম্ভব

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১০ মার্চ ২০১৭

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা গেলে বন্যা এড়ানো সম্ভব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামছে। কোন কোন অঞ্চলে এর প্রভাবে বিঘিœত হচ্ছে সেচ কাজ। অথচ কেবল সচেতনতার মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ব্যবস্থা হতে পারে কৃষি কাজের। গ্রামাঞ্চলে পুকুরে ও শহরাঞ্চলে বাড়ির ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সঠিকভাবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা গেলে বর্ষাকালে বন্যা এড়ানোও সম্ভব। তবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে দেশে জাতীয়ভাবে কোন বিল্ডিং কোড নেই। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই পানি সংরক্ষণে প্রয়োজন আইনগত কাঠামো, নীতিমালা, কৌশল ও নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে সচেতনতা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে একটি অভিজাত হোটেলে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত রেইনওয়াটার হার্ভেস্টিং সম্মেলনে বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। পানির সঙ্কট মোকাবেলায় বিকল্প হিসেবে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরতে এ সম্মেলনের আয়োজন করে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ। সম্মেলন আয়োজনে সার্বিকভাবে সহায়তা করে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং নেটওয়ার্ক (আইটিএন-বুয়েট), সেন্টার ফর সায়েন্স এ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই) ইন্ডিয়া এবং রেইন ফোরাম। প্রসঙ্গত, বৃষ্টির পানি মাটির নিচে যাওয়ার আগে সংরক্ষণ করে সেই পানি দিয়ে কৃষি কাজ করাকে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং বলা হয়ে থাকে। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সেন্টার ফর সায়েন্স এ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই) ইন্ডিয়ার মহাপরিচালক ড. সুনিতা নারায়ণ গ্রামাঞ্চলে কৃষিকাজে কিভাবে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা সম্ভবÑ সেই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতে আগে বৃষ্টির পানি থেকেই ভূগর্ভস্থ পানি রিচার্জ হতো। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাত কমে গেছে। তাই আমাদের বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির প্রতিটি ফোটাকে সংরক্ষণ করতে হবে। গ্রামাঞ্চলে পুকুরে এবং শহরে বাড়ির ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির পানির সঠিক সংরক্ষণ করতে পারলে বর্ষাকালে বন্যা এড়ানোও সম্ভব। স্বাগত বক্তব্যে ড. মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে যে সব সমস্যা রয়েছে রেইনওয়াটার হার্ভেস্টিং তার একটি বাস্তবসম্মত, সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধান। শুধু পানি সঙ্কট মোকাবেলা নয়; পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত পদক্ষেপ গ্রহণ, জলাবদ্ধতা হ্রাস এবং পানি সংশ্লিষ্ট ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার করতে হবে। সম্মেলনে ড. তৌফিক এম সিরাজের উত্থাপিত এক প্রবন্ধে বলা হয়, ঢাকা শহরে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন লিটার পানির ঘাটতি রয়েছে। ঢাকা শহরের সরবরাহকৃত পানির ৮৭ শতাংশই ভূগর্ভস্থ। ঢাকায় ১০০ বছরে গড়ে ২ হাজার ২৯০ মিমি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। অথচ এই বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা গেলে মোট চাহিদার ১৫ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব।
×