ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভেজাল সৃষ্টির দায় থেকে চার প্রতিষ্ঠানকে মুক্তি দিচ্ছে জ্বালানি বিভাগ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ভেজাল সৃষ্টির দায় থেকে চার প্রতিষ্ঠানকে মুক্তি দিচ্ছে জ্বালানি বিভাগ

রশিদ মামুন ॥ জ্বালানি তেলে ভেজাল সৃষ্টির দায় থেকে চার প্রতিষ্ঠানকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে জ্বালানি বিভাগ। গ্যাস ক্ষেত্রের উপজাত কনডেনসেট প্রক্রিয়া না করে সরাসরি পেট্রোল পাম্পের কাছে বিক্রি করার অভিযোগে এই চারটি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ বন্ধ করেছিল পেট্রোবাংলা। সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগের এক বৈঠকে এদের বিষয়ে নমনীয় হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা এবং বিপিসিকে একটি কমিটি করে দ্রুত সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের বেসরকারী খাতের ১৩ কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্টের মধ্যে চৌধুরী রিফাইনারি লিমিটেড, লার্ক পেট্রোলিয়াম কোম্পানি লিমিটেড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি লিমিটেড, গোল্ডেন কনডেনসেট অয়েল রিফাইনারি ফ্যাক্টারি লিমিটেড এ কনডেনসেট সরবরাহ স্থগিত করা হয়। কনডেনসেট প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম পণ্য পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, কেরোসিন ইত্যাদি উৎপাদন করা হয়। এখন দেশে পেট্রোবাংলার অধীন কিছু প্ল্যান্ট, বিপিসির মালিকানাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি (ইআরএল) ও বেসরকারী কিছু ফ্র্যাকশনেশন কারখানায় কনডেনসেট প্রক্রিয়া করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ রয়েছে বেসরকারী কোম্পানিগুলো সারাদেশে জ্বালানি তেল ভেজালের সঙ্গে জড়িত। সব থেকে বেশি ভোজাল মেশানো হয় অকটেন এবং পেট্রোলে। দামের দিক থেকে এই দুই ধরনের জ্বালানির দামই বেশি। তবে সব থেকে বেশি বিক্রি হওয়া ডিজেলে ভোজাল মেশানো সহজ হওয়ায় তাও বাদ পড়ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলেন, পেট্রোল এবং অকটেন হাল্কা জ্বালানি তেল কিন্তু ডিজেল তৃলনামূলকভাবে একটু ভারি হওয়ায় ভেজাল দেয়া সহজ। সব থেকে উচ্চমূল্যে বিক্রি হওয়া পেট্রোল এবং অকটেনের পুরোটাই বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদ। বিদেশ থেকে কোন পেট্রোল এবং অকটেন আমদানি করা হয় না। উচ্চমূল্যের এই জ্বালানিতেই ভেজালের ব্যবস্থা করে দেয় কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেশন প্লান্ট মালিকরা। গ্যাস ক্ষেত্রগুলোর কাছ থেকে কনডেনসেট নিয়ে সরাসরি পেট্রোল পাম্পের কাছে বিক্রি করায় চারটি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ স্থগিত করা হয়। গত বছর মাঝামাঝি সময়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় জ্বালানি বিভাগ। এর পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে তদন্তে নামে। কনডেনসেট প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন পেট্রোল এবং অকটেন এমনিতে লো গ্রেডের। আন্তর্জাতিক বাজারে যে পেট্রোল এবং অকটেন বিক্রি হয় তার থেকে নিম্নমানের হওয়ায় বাংলদেশ পেট্রোল এবং অকটেন রফতানি করতে পারে না। এর আগে একটি প্রতিবেশী দেশে পেট্রোল এবং অকটেন রফতানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু দেশটি জ্বালানি দুটি রফতানির জন্য নির্দিষ্ট গ্রেড নির্ধারণ করে দেয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এমনিতে কম দামের জ্বালানির উচ্চমূল্য এর মধ্যে নিম্নমান আর ভেজালে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
×