ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুখরিত হবে ঢাবির হাকিম চত্বর

জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হচ্ছে কাল, ৭ দেশ থেকে আসছেন কবি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হচ্ছে কাল, ৭ দেশ থেকে আসছেন কবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার আশ্রয়ে অশুভ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনায় ১৯৮৭ সালে যাত্রা করেছিল জাতীয় কবিতা উৎসব। স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে কথা বলা এই আয়োজনটি ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছে ৩০ বছর। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বাণী নিয়ে বসছে উৎসবের ৩১তম আসর। ‘কবিতা মানে না বর্বরতা’ সেøাগানে পয়লা ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে দুই দিনের জাতীয় কবিতা উৎসব। বরাবরের মতো এবারও উৎসবের আঙিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণের হাকিম চত্বর। উৎসব উদ্বোধন করবেন প্রখ্যাত কবি বেলাল চৌধুরী। জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে কবি সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হক, কবি রফিক আজাদ ও কবি শহীদ কাদরীর স্মৃতির প্রতি। এবারের আয়োজনে ২০১৬ সালের জাতীয় পরিষদ পুরস্কার প্রদান করা হবে কবি সায্্যাদ কাদিরকে এবং জাতীয় কবিতা উৎসব সম্মাননা পাচ্ছেন কবি বেলাল চৌধুরী। এবারের উৎসবে অংশ নেবেন সাত দেশের ১৪ কবি। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উৎসব কমিটির আহ্বায়ক কবি স্থপতি রবিউল হুসাইন, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কবি কাজী রোজি, পরিষদের অর্থ সম্পাদক বুলবুল মহলানবীশ, আমিনুর রহমান সুলতান প্রমুখ। মুহাম্মদ সামাদ বলেন, এবারের উৎসেব শিল্প-সাহিত্যের সামগ্রিক বিবেচনায় জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা দেয়া হবে কবি বেলাল চৌধুরীকে এবং জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার পাচ্ছেন কবি সায্্যাদ কাদির। উৎসবে অংশ নিতে ইতোমধ্যেই ২০০ কবি নিবন্ধন করেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আশা করা হচ্ছে, নিবন্ধিত কবির সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে যাবে। লিখিত বক্তব্যে তারিক সুজাত জানান, এবারের উৎসবে ভারতের কবি আশিস সান্যাল, বীথি চট্টোপাধ্যায়, রাতুল দেব বর্মণ, কাজল চক্রবর্তী, দিলীপ দাস, অংশুমান কর, প্রাবন্ধিক চিন্ময় গুহ, সুইডেনের কবি ক্রিস্টিয়ার কার্লসন, অস্ট্রিয়ার মেনফ্রেড কোবো, জার্মানির ইওনা বুরঘার্ট ও টোবিয়াস বুরঘার্ট, পুয়ের্তোরিকোর লুস মারিয়া লোপেজ ও মারিয়া ডি লোস এ্যানজেলেস কামাকো রিভাস, রাশিয়ার ড. ভিক্টর আলেক্সান্দ্রোভিচ পোগাদাইভ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। এর বাইরেও আরও কবি আসবেন বলে কথা দিয়েছেন। উৎসবসূচী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বুধবার সকাল দশটায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, পটুয়া কামরুল হাসান এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হবে উৎসব আনুষ্ঠানিকতা। ৩১তম আসরের উদ্বোধন করেন কবি বেলাল চৌধুরী, সভাপতিত্ব করবেন পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ। উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার পর সকাল সাড়ে এগারোটায় শুরু হবে মুক্ত আলোচনা পর্ব। ‘বর্বরতার বিরুদ্ধে কবিতা’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কবি-লেখক-প্রতিনিধিরা। দুপুর দেড়টা থেকে শুরু হবে কবিতাপাঠ পর্ব। পাঁচ পর্বের এসব আসরে সভাপতিত্ব করবেন দিলারা হাফিজ, আনোয়ারা সৈয়দ হক, শিহাব সরকার, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রামেন্দু মজুমদার। এবারের উৎসবের প্রতিপাদ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও সমাজের শিরা-উপশিরায় এক অশুভের থাবায় সঙ্কটাপন্ন শান্তিকামী মানুষ। শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে মানবিকতার প্রত্যয়ে আমরা বরাবরই দৃঢ়কণ্ঠ। একত্রিশতম উৎসবে বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী উচ্চারণের মর্মবাণী পৌঁছে দিতে চাই সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের কাছে। বৃহস্পতিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন সকাল এগারোটায় ‘কবিতার অনুবাদ : মুক্ততা ও মৌলিকতা’ শিরোনামে মুক্ত আলোচনা পর্বে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। ‘কবিতা মানে না বর্বরতা’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করবেন ইমিরেটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। এছাড়াও এদিন কবিতাপাঠ, ছড়াপাঠ, কবিতার গানসহ অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন বিষয়ক অধিবেশন বিকেল সাড়ে পাঁচটায়।
×