ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক সারিতে শাসক ও বিরোধীদল

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৭

এক সারিতে শাসক ও বিরোধীদল

ইঁদুরের উৎপাতে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার সদস্যরা। একঝাঁক ইঁদুর বিধানসভার একদিক দিয়ে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। রাতে বিধানসভার আলো নিভলেই শুরু হয় এদের মহোৎসব। বিধায়কদের ফেলে যাওয়া খাবার এই মহোৎসবের রসদ। ইঁদুর বাহিনীর আক্রমণে বেসামাল শাসক ও বিরোধী শিবিরের দুই নেতা। এমনিতেই দল বদল ঘিরে তারা একে অন্যের সঙ্গে লড়াইরত। কিন্তু ইঁদুর বাহিনী তাদের এক কাতারে নিয়ে এসেছে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও পাবলিক এ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান মানস ভুঁইয়ার সরকারী গা?ড়তে দাঁত বসিয়েছে তারা। মান্নানের গাড়ির ড্যাশবোর্ডে থাকা তেল ভরার কুপন ছিঁড়ে কুটিকুটি করেছে ইঁদুর। বাদ পড়েনি নাকের ড্রপের প্লাস্টিকের শিশিও। মান্নান ও মানসবাবুকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে দু’টি গাড়ি রাতেই ফিরে আসে বিধানসভায়। তাই তাদের গাড়িতেই হামলা হয়েছে বেশি। অন্য মন্ত্রীদের গাড়ি বিধানসভায় থাকে না বলে তারা আপাতত এমন আক্রমণ থেকে রেহাই পেয়েছেন। বিধানসভার এক কর্মী বলেছেন, ‘এখানে কয়েক প্রজন্ম কাটিয়েছে এই ইঁদুরগুলো। সরকার বদলেছে, বারবার চেষ্টা হয়েছে। ওদের নড়ান যায়নি।’ শেষ পর্যন্ত ইঁদুরের হামলার কাছে হার মেনেছেন বিধানসভার স্পীকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার সহাস্য মন্তব্য, ‘পৃথিবীর কোথায় ইঁদুর নেই? কেয়ারটেকারদের বলেছি, ইঁদুর সরানোর ব্যবস্থা করতে। তবে অধিবেশন চলাকালে সেটি করা যায় না। কোথায় কখন ইঁদুর মরে-পচে পড়ে থাকবে, অধিবেশনে অসুবিধা হবে।’ স্পীকারের কথায়, অধিবেশন বাদ দিয়ে ছুটিরদিন দেখে ইঁদুর নিধনের চেষ্টা হয়। তবে তাতে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, এমন নয়। স্পীকারকে সমর্থন করেই মানসবাবু বলছেন, ‘খরগোশের সাইজের ইঁদুরগুলো সামলাতে না পারলে মূল্যবান নথিপত্র নষ্ট হবে। শুনেছি, স্পীকার চেষ্টা করছেন কিছু ব্যবস্থা করার।’ রাজনীতিতে মানসবাবুর বিপরীত বিন্দুতে থেকেও মান্নান বলছেন, ‘সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে আছি। ইঁদুর বাহিনীর সঙ্গে কী করে যুদ্ধ করব? ওরা তো সরকারের সেনাবাহিনীও নয়, সবার ঘরে আছে।’ অনেকে বলছেন, ইঁদুরের দাঁত কার্যত শাসক ও বিরোধীদের তফাত দূর করে এক সারিতে নিয়ে এসেছে। -আনন্দবাজার পত্রিকা
×