ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন বিমানবন্দরে মুসলিম যাত্রী আটক, পাল্টা ব্যবস্থা নেবে ইরান

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭

মার্কিন বিমানবন্দরে মুসলিম যাত্রী আটক, পাল্টা ব্যবস্থা নেবে ইরান

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের নয়া প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের ফোনালাপ হয়েছে। শনিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বসে পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এদিকে বিশ্বের সাত মুসলিম দেশের লোকের ভিসা দেয়া তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়ার খবরে জাতিসংঘসহ বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছে। শনিবার জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে দুই মুসলিম যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। অবশ্য এই দুইজনকে আটকের পর পরই তাদের ছেড়ে দিতে নিউইয়র্ক আদালতে মামলা ঠুকেছে এক মানবাধিকার গ্রুপ। একই দিন মিসরের কায়রো ও নেদারল্যান্ডস থেকে যুক্তরাষ্ট্রগামী ১৩ মুসলিম যাত্রীকে বিমানে উঠতে দেয়া হয়নি। ফলে ইরানের অনেক যাত্রী তাদের যাত্রা বাতিল করেছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। ইরান তিন মাসের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘অপমান’ আখ্যা দিয়ে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তাদের দেশে মার্কিনীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানসহ ৬ মুসলিম দেশের লোককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করার ঘটনা অপমানজনক। শুক্রবার ইরানসহ লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন ও ইরাকের নাগরিকদের তিন মাসের জন্য ভিসা বন্ধ রাখার এক আদেশে সই করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পরদিন শনিবার ভিসা থাকার পরও ইরাকের পাঁচ জন এবং এক ইয়েমেনিকে মিসরের কায়রো বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কগামী ইজিপ্টএয়ারের একটি উড়োজাহাজে উঠতে দেয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কায়রো বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই ছয় যাত্রী কায়রো বিমানবন্দরে ট্রানজিট নেন। সেখান থেকে নিউইয়র্কগামী ফ্লাইটে উঠতে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরকর্মীরা তাদের আটকে দেয় এবং ওই ছয়জনকে সেখান থেকে তাদের নিজ নিজ দেশে যাওয়ার উড়োজাহাজে তুলে দেয়া হয়। যদিও এসব যাত্রীর সবার কাছেই বৈধ ইমিগ্রেশন ভিসা ছিল। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম। এই খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নোবেলজয়ী মালালা ইফসুফজাই ও ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। ইউএনএইচসিআর বলেছে, যুদ্ধ ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে দেশান্তরী হওয়া মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রাখা উচিত। ট্রাম্পকে এই অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে এই আন্তর্জাতিক সংস্থা দুটি শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছে, শরণার্থী ও অভিবাসীদের সঙ্কট এখনকার মতো প্রকট আগে কখনও হয়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচী বিশ্বে খুবই গুরুত্ব¡পূর্ণ। শুক্রবার নির্বাহী আদেশে সই করার পর দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে রাখতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হলো। মালালা বলেছেন, সহিংসতা, যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা সন্তান মা ও বাবার জন্য দরজা বন্ধ করে দিলেন ট্রাম্প। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গও ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের এ ধরনের নির্বাহী আদেশে তিনি উদ্বিগ্ন। অনেক মার্কিনীর মতো তিনিও অভিবাসীদের পক্ষে।
×