ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ওয়াহিদুল হকের দশম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত: ০৭:২২, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

আজ ওয়াহিদুল হকের দশম মৃত্যুবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও সংগঠক ওয়াহিদুল হকের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শুক্রবার। ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি ৭৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওয়াহিদুল হককে নিবেদিত আলোচনা করবেন জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। দ্বিতীয় পর্বে গোলাম সারোয়ারের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘মহীয়সী রোকেয়া’। দেশের সংস্কৃতিচর্চার পথ নির্মাণে অগ্রপথিক ছিলেন ওয়াহিদুল হক। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান সংস্কৃতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। বাঙালিত্বের গর্ব নিয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য আজীবন মানুষ গড়েছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন, পথ দেখিয়েছেন ওয়াহিদুল হক। তিনি ছিলেন বাংলার মানুষের শিক্ষা-সংস্কৃতি ও মননের আজীবন সঙ্গী। ষাটের দশকের গোড়াতে ছায়ানট আন্দোলন ও একে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানে রূপদানকারী ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৯৯ থেকে আমৃত্যু সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও আবৃত্তি প্রতিষ্ঠান ‘কণ্ঠশীলন’, মৃত্যুর কিছুদিন আগে গড়ে তোলা ‘নালন্দা’ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা এবং তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর ওপর প্রতিষ্ঠা করা ওয়াহিদুল হকের সবচেয়ে বড় অবদান। পাশাপাশি তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ গঠন করে সারাদেশে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ব্রতচারী সমিতির সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আবৃত্তি ফেডারেশনের (পরে আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং একাত্তরের স্বাধীন বাংলা শিল্পী সংস্থার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। এছাড়া আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনের সঙ্গে তিনি আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন। তিনি অবজারভারের শিফট ইনচার্জ, ডেইলি স্টারের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। দি পিপল পত্রিকায় সম্পদনা বিভাগে কাজ করেছেন। নিউ নেশন ও মর্নিং নিউজেও তিনি কাজ করেন। এছাড়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। জীবনের শেষদিকে ‘অভয় বাজে হৃদয় মাঝে’ ও ‘এখনও গেল না আঁধার’ শিরোনামে নিয়মিত কলাম লিখেছেন দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায়। ওয়াহিদুল হকের পুরো নাম আবুল ফারাহ মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হক। ১৯৩৩ সালের ১৬ মার্চ ঢাকার কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের ভাওয়াল মনোহরীয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবু তৈয়ব মাজহারুল হক ও মা মেওয়া বেগম। ১৯৫০ সালে তিনি আরমানিটোলা গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী সন্জীদা খাতুনকে বিয়ে করেন। তাঁদের সন্তানরা হলেনÑ অপলা, রুচিরা ও পার্থ। পরবর্তীকালে তিনি সঙ্গীতশিল্পী ফ্লোরা আহমেদকে বিয়ে করেন। এ পক্ষের ছেলের নাম এষণ।
×