ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের লক্ষ্য ’২১ সাল নাগাদ ২০ লাখ আইটি পেশাজীবী তৈরি ॥ পলক

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

সরকারের লক্ষ্য ’২১ সাল নাগাদ ২০ লাখ আইটি পেশাজীবী তৈরি ॥ পলক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে একুশ শতকের উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে ২০ লাখ আইটি পেশাজীবী তৈরি করা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আইটি বিভাগ প্রশিক্ষণ, বিশেষায়িত ল্যাব ও আইটি প্রশিক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছে, বললেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে আইসিটি খাতের গত তিন বছরের সাফল্য তুলে ধরা হয়। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রগতিশীল তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জাানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মোট তরুণের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। যা মোট জনসংখ্যার ৭০ ভাগ। দেশের এসব মেধাবী তরুণরা যেন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে তার জন্যই আইসিটি ডিভিশনের অক্লান্ত পরিশ্রম। ইতোমধ্যেই আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশে ৪৫ হাজার দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া প্রফেশনাল আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ২০ হাজার নারী ও ১ হাজার ৯২০ জন মিডিয়াকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের ৫০ দিনব্যাপী আউটসোর্সিংয়ের অধীনে ৫ হাজার ১২০ জনের কোর্স চলমান রয়েছে। মোট ৫৫ হাজার তরুণ-তরুণীকে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়নের আইসিটি ডিভিশন মোবাইল ট্রেনিং ল্যাব চালু করেছে। অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব সম্বলিত ৭টি স্মার্ট বাসের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী ৩ বছরে দেশের ৫০ হাজার নারীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, বলেও জানান তিনি। তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের পরিধি প্রসারিত করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৮টি আইটি পার্ক গড়ে উঠছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইটি খাতে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশীয় আইসিটি শিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই আইটি পার্কগুলো। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি রফতানি ৫ বিলিয়ন ডলার ও আইটি পেশাজীবীদের সংখ্যা ২০ লাখে উন্নীত করা এবং জিডিপিতে আইসিটি খাতের অবদান ৫ শতাংশ নিশ্চিত করবে এই পার্কগুলো। মানবসম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি আইসিটি শিল্পের উন্নয়ন, ই-গবর্নেন্স প্রতিষ্ঠা ও কানেক্টিভিটি স্থাপন এই চারটি ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল উপাদান। ২০০৯ সাল থেকে এই চার স্তম্ভকে সামনে রেখেই সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মযজ্ঞ পালন করছে। আর তাই অন্যান্য বছরের মতো ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও এ বিভাগের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের হগার শত ভাগের উর্ধে অর্থাৎ ১২১ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। শুধু পরিসংখ্যানই নয়, তথ্য ও প্রযুক্তি কার্যকরভাবে ব্যবহার করে দারিদ্র্য কমানো ও মানব উন্নয়ন বাংলাদেশের এ মডেল এখন পুরো বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এছাড়া, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঠিকমত তাদের ল্যাবগুলো ব্যবহার করতে পারছে কি-না ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও ল্যাবে কম্পিউটার ব্যবহারে কোন অসঙ্গতি বা অবহেলা দেখা দিলে তা তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। পলক বলেন, ‘আমরাও চাই সব ধরনের অসংগতি দূর করতে। এ ছাড়া সামনে সোশ্যাল সচেতনতা বৃদ্ধিতে এক্সপো’র আয়োজন করা হবে।’ বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এগিয়ে যাওয়ার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেয়া উদ্যোগ, অগ্রগতি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্য উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভাপতি ইমরান আহমেদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, হাইটেক পার্ক অথরিটির ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টর হোসনে আরা বেগম প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, অনেক দিন আগে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হলেও বিগত সরকারের অবহেলার কারণে এর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমান সরকারের উদ্যোগের কারণে দ্রুত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই, এর অভ্যন্তরীণ প্রায় ৫কি. মি. রাস্তা, সড়ক বাতি ও অফসাইড ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের মে মাসের মধ্যে ওয়েসিসের জন্য ম্যানুফ্যাকচারিং ভবন তৈরি সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’
×