ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়ে ও জামাই গ্রেফতার সম্পত্তির লোভে মাকে আটকে রেখে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

মেয়ে ও জামাই গ্রেফতার সম্পত্তির লোভে মাকে আটকে রেখে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ সম্পত্তির লোভে রাজশাহীর দুর্গাপুরে মেয়ে ও জামাই মিলে বৃদ্ধা মাকে ঘরে আটকে রেখে ব্যাপক নির্যাতন করেছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দিনভর নির্যাতন চালানো হয়েছে শাহিদা বেগম (৫৫) নামের বৃদ্ধাকে। স্বামীর ব্যাংকে রেখে যাওয়া কোটি টাকার হিসাব না দেয়ায় মেয়ে সুমি ও জামাই রনি তাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় পুলিশ সুমি ও রনিকে গ্রেফতার করেছে। আর নির্যাতনের শিকার শাহিদাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। শাহিদা দুর্গাপুর পৌর এলাকার শ্রীপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী। দুর্গাপুর থানার এসআই মহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন শাহিদাকে বাড়ির গেট ভেঙ্গে উদ্ধার করে। এ সময় তারা মেয়ে সুমি ও জামাই রনিকে আটকে রাখে দুর্গাপুর থানায় খবর দেয়। সন্ধ্যার পর পুলিশ গিয়ে শাহিদাকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত মেয়ে ও জামাইকে আটক করে। এ ঘটনায় রবিবার শাহিদা নিজে বাদী হয়ে মেয়ে সুমি ও জামাই রনির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুর্গাপুর পৌর এলাকার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন দেড় বছর আগে। মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে বড় মেয়ে সুমির নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় কোটি টাকা শর্তসাপেক্ষে রেখে যান। সাত্তারের স্ত্রী শাহিদা মারা গেলে ওই টাকার মালিক হবেন বড় মেয়ে সুমি। এ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই সুমি ও রনি শাহিদাকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু কোন চাপেই কাজ হচ্ছিল না। সর্বশেষ শুক্রবার মেয়ে সুমি ও জামাই রনি বেড়াতে আসে শাহিদার বাড়িতে। রাতে সেখানে টাকার হিসাব নিয়ে শুরু হয় ঝগড়া। এরই জের ধরে শাহিদাকে ঘরে আটকে রাখে মেয়ে সুমি ও জামাই রনি। পরের দিন শনিবারও আটকে রেখে চলে দফায় দফায় নির্যাতন। একপর্যায়ে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। পরে ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে গ্রামের লোকজন বাড়িটি ঘেরাও করে বাড়ির গেট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে শাহিদাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ গিয়ে শাহিদা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, ব্যাংকে রাখা কোটি টাকা বাগাতেই শাহিদাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তিনি মারা গেলে ওই টাকার মালিক হতো বড় মেয়ে সুমি। তাদের ধারণা, সুমি ও রনি দুজনেই মাদকাসক্ত। তারা প্রায়ই শাহিদার ওপর নির্যাতন চালাত। কিন্তু গ্রামের লোকজন সেটা দেখেও দেখত না। দুর্গাপুর থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর শাহিদার মেয়ে সুমি ও জামাই রনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
×