ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুমিল্লায় মুক্তিপণ না পেয়ে স্কুলছাত্রকে খুন করে লাশ তিতাস নদীতে নিক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

কুমিল্লায় মুক্তিপণ না পেয়ে স্কুলছাত্রকে খুন করে লাশ  তিতাস নদীতে নিক্ষেপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ও দাউদকান্দি, ২৬ ডিসেম্বর ॥ হৃদয় নামের এক স্কুলছাত্রকে খুন করে লাশ তিতাস নদীতে ফেলে দিয়েছে অপহরণকারীরা। হৃদয়ের বাবার নিকট মোবাইল ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল অপহরণকারী চক্র। ঘটনা পুলিশকে জানালে হৃদয়কে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছিল। গত ২১ ডিসেম্বর জেলার তিতাসে ওই অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ পেয়ে এ ঘটনায় পুলিশ রবিবার গভীর রাতে চার অপহরণকারীকে আটক করার পর তাদের স্বীকারোক্তি অনুসারে সোমবার সকাল থেকে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারে তিতাস নদীতে ডুবুরি দিয়ে তল্লাশি শুরু করে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশের সন্ধান মেলেনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে তিতাসের বলরামপুর ইউনিয়নের মধ্য আকালিয়া গ্রামের পাশে খেলার মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য নিহত স্কুলছাত্রের ফুফাত বোনের ছেলে মাহিন বাড়ি থেকে স্কুলছাত্র হৃদয়কে ডেকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টার পরও সে বাড়ি ফিরে না আসায় তার বাবা-মা বিভিন্ন স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ করতে থাকেন। পরের দিন একটি মোবাইল ফোন থেকে হৃদয় অপহরণকারীদের হেফাজতে রয়েছে এবং ছেলেকে ফেরত পেতে হলে তার বাবার নিকট ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে হৃদয়কে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর হৃদয়ের বাবা বশির আহমেদ বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই রবিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে অপহরণের অভিযোগে একই উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি মেম্বার রেনু মিয়ার ছেলে রিয়াদ হোসেন (২০), আকালিয়া গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩০), গুনপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে সাকিব (২২) ও নজরুল ইসলামের ছেলে মহিন আহমেদকে (২৪) আটক করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিতাস থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ শহিদুল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হৃদয়কে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। অপহরণকারীদের দাবির টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা হৃদয়কে হত্যা করে বস্তা ভরে লাশ তিতাস নদীতে ফেলে দেয়। নিহত স্কুলছাত্র আবু তাহের হৃদয় তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের মধ্য আকালিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বশির আহম্মেদের একমাত্র ছেলে। সে বাতাকান্দি সরকার সাহেব আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র। সোমবার সকালে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুসারে তিতাস নদীতে ডুবুরি দিয়ে লাশের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিকে তিতাসপাড়ে হৃদয়ের স্বজনদের আহাজারি চলছে। স্কুলের সহপাঠীসহ এলাকার শোকার্ত হাজার হাজার জনতা তিতাসপাড়ে ভিড় করেছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছে।
×