ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানী ঢাকার যানজট সরকারের দুশ্চিন্তার বিষয়, তবে বসে নেই

প্রকাশিত: ০১:১৪, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

রাজধানী ঢাকার যানজট সরকারের দুশ্চিন্তার বিষয়, তবে বসে নেই

সংসদ রিপোর্টার ॥ পদ্মা সেতুর পাশাপাশি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও শেখ হাসিনা সরকারের রয়েছে। এই সেতু নির্মাণে ইতোপূর্বে উন্নয়ন সহযোগি সংস্থাসমূহের অর্থ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত সাপেক্ষে যথাসময়ে এই সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জাসদের লুৎফা তাহেরের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, রাজধানী ঢাকার যানজট সরকারের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। এই যানজট দীর্ঘদিনের সমস্যা। তারপরেও আমরা বসে নেই। নানা পরিকল্পনা নিচ্ছি। পরিবার প্রতি কতটি প্রাইভেট কার থাকবে সেটাও আইন করে সুনির্দিষ্ট সীমারেখা করে দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে আইন করতে শীঘ্রই একটি বিল আনা হবে জাতীয় সংসদে। অপর এক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহার করায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ণ করছে। তিনি জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রকল্পের শুরু থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত ১১ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণ কাজ ৩১ ভাগ, নদী শাসন কাজ ২৬ ভাগসহ সার্বিক ভৌত অগ্রগতি শতকরা ৩৭ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। যানজট নিয়ে মূল প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী জানান, রাজধানী ঢাকায় যানজট নিরসনে সরকারের গৃহীত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী কেরানীগঞ্জের যাতায়াত সহজ করার জন্র শহীদ বুদ্ধিজীবি সেতু নির্মাণ, টঙ্গী-ঘোড়াশাল-কালিগঞ্জ-পাঁচদোনা সড়কের ১ম কিলোমিটারে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু নির্মাণ এবং বনানী লেভেল ক্রসিংয়ে টেন চলাচলের সময় সৃষ্ট যানজট নিরসনে ৮০৪ মিটার দীর্ঘ রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের আরও জানান, ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিম যাতায়াত নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ মিটার দীর্ঘ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার (মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড) নির্মাণ ও মহানগরে যানবাহন প্রবেশ ও নির্গমনের নতুন রুট হিসেবে সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিরুলিয়া-আশুলিয়া মহাসড়ক এবং এই মহাসড়কের প্রথম কিলোমিটারে তুরাগ নদীর ওপর ১৮৬ মিটার দীর্ঘ বিরুলিয়া সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টির বেগম মাহজাবীন মোরশেদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, দেশের মহাসড়কগুলোতে সমীক্ষার মাধ্যমে মোট ২২৭টি দূর্ঘটনাপ্রবণ স্থান (ব্লাক স্পট) চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মহাসড়কের ৬৮টি ব্লাক স্পটের প্রতিকারমূলক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় ১৫টি ব্লাক স্পটে প্রতিকারমূলক কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি জানান, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক ৪-লেন উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ধীরগতি যানবাহনের জন্য পৃথক লেন রাখা হয়েছে, যা মূল সড়কের যানবাহনের সঙ্গে দূর্ঘটনা এড়াতে সহায়ক হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা হতে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক উভয়পাশে ধীরগতি যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
×