স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আপনাদের দোয়ায় সুস্থ আছি, ভাল আছি। দোয়া করবেন, যেন ভাল থাকি। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। আমি দেশবাসী ও মিডিয়ার ভাই-বোনদের কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার জন্য অনেক করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ।’ সিলেটে বখাটে বদরুলের চাপাতির আঘাতে গুরুতর আহত খাদিজা আক্তার নার্গিস শনিবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে গণমাধ্যমের সামনে এসব কথা বলেন। দেড় মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসকের নিবিড় তত্ত্ববধানে থাকা খাদিজা প্রথমবারের মতো কথা বললেন গণমাধ্যমের সামনে। স্কয়ার হাসপাতালের নিচতলায় খাদিজাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তার চিকিৎসক। সেখানে হুইল চেয়ারে বসে কথা বলেন তিনি। তখনও তার বাম হাতে ব্যান্ডেজ ছিল। এ সময় খাদিজার প্রধান চিকিৎসক নিওরো সার্জারির এ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডাঃ এ এম রেজাউস সাত্তার ও মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক ডাঃ মির্জা নাজিমউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
খাদিজার চিকিৎসার নানা দিক তুলে ধরে ডা. মির্জা নাজিমউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা সবাই জানেন, সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিস ৩ অক্টোবর নৃশংসতার শিকার হন। সিলেটে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরদিন তাকে স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তখন খাদিজার যে অবস্থা তাতে তার বাঁচার সম্ভাবনা ছিল খুবই ক্ষীণ, শতকরা মাত্র ৫ শতাংশ। তারপর এখানে আমরা তার সার্জারি করি। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তার মাথায় ও দুই হাতেই অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন তাকে সাভারের সিআরপিতে স্থানান্তর করা হবে। কারণ তার ফিজিওথেরাপি দরকার।
খাদিজার বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের এ পরিচালক বলেন, সে এখন নিজে খেতে পারে, যেকোনও লেখা পড়তে পারে। ধরে ধরে নিজে হাঁটতে পারে। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী তার জেনারেল নিউরোলজিক্যাল কন্ডিশন ভাল। সার্বিকভাবে বললে খাদিজা এখন ভাল আছে। তাই সে এখন হাসপাতাল ছাড়তে পারবে। খাদিজা হাসপাতাল ছাড়বে আজ রবিবার। আঘাতের কারণে এখনও অবশ হয়ে থাকা বাম হাত ও পায়ের চিকিৎসার জন্য সোমবার তাকে সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) পাঠানোর কথা রয়েছে। ডাঃ মির্জা নাজিমউদ্দিন খাদিজার চিকিৎসার ব্যাপারে স্কয়ার হাসপাতালের ওপর আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার সময় সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ৪ অক্টোবর ভোরে আনা হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। ওই দিনই তার অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার উন্নতি হলে ১২ অক্টোবর খুলে দেয়া হয় লাইফ সাপোর্ট। এ ঘটনায় সিলেটের শাহপরাণ থানায় বদরুলকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। বদরুল হামলার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: