ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সানির ফোকাস কম রান দেয়া

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১২ নভেম্বর ২০১৬

সানির ফোকাস কম রান দেয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার কি দুর্দান্ত বোলিংই না করলেন রংপুর রাইডার্সের বামহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। ১৬ বল করে ২টি মেডেনসহ ৩ উইকেট দিলেন। কোন রানই দিলেন না। বিশ্ব ক্রিকেটে যে কোন ধরনের টি২০ ক্রিকেট মিলিয়ে দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটি। এমন অসাধারণ বোলিং করে রংপুরকে জেতানোর পর বলেও দিলেন, ‘কম রান দেয়াই আমার ফোকাস।’ ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার টি২০ টুর্নামেন্টে চিলাউ মেরিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে দিনুক হেটিয়ারাচ্চি ৫ বলে কোন রান না দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। এটি এখন পর্যন্ত টি২০তে কোন রান না দিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের ঘটনা। বার্ঘার রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার হয়ে ২০০১ সালে একটি মাত্র টেস্ট খেলা হেটিয়ারাচ্চি এমন রেকর্ড গড়েন। বৃহস্পতিবার সানিও কোন রান না দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন। তবে বল বেশি করেছেন বিধায় হেটিয়ারাচ্চিকে পেছনে ফেলতে পারেননি। সানিকে তাই সাংবাদিকরা কাছে পেয়ে প্রথম প্রশ্নটি এই রেকর্ড নিয়েই করেন। আপনি হয়তো জানেন যে একটা নতুন রেকর্ড করেছেন আপনি, টি২০’র দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারের বেশি বল করে কোন রান না দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। এটা নিয়ে কিছু বলবেন? সানি জানান, আমি জানতাম না রেকর্ডের ব্যাপারে। আমি ভেবেছিলাম এটা হয়তো আমার সেরা বোলিং ফিগার। ম্যাচ যখন শুরু হয়, তখনও এরকম রেকর্ড করার কোন পরিকল্পনা ছিল না। সবসময় যে পরিকল্পনা থাকে উইকেট টু উইকেট বল করার, সেটাই ছিল। আল্লাহর রহমত যে আমি এরকম একটা রেকর্ড করতে পেরেছি। আপনার কি একটা ইচ্ছা ছিল যে কোন রান দেবেন না? শূন্য রান দিয়েই থাকবেন, এরকম কোন প্ল্যান ছিল? সাকিব বলেন, না, সেরকমও কোন প্ল্যান ছিল না। প্রথম ওভারটা আমি বুঝিনি যে মেডেন হয়েছে। প্রথম ওভারে যে রানআউট হলো, আমি ভেবেছিলাম ওই বলে রান হয়ে গেছে। আর শেষ বলে যেটা দুই রান হয়, সেটাও লেগবাই হয়েছিল। তাই আমি ঠিক বুঝতে পারিনি যে ওইটা মেডেন ওভার ছিল। যাই হোক, পুরো টিমেরই এফোর্ট ছিল। সবাই চেষ্টা করেছিলাম নিজের সেরাটা দেয়ার। আপনি যখন আক্রমণে আসলেন তখন তাদের প্রায় ৫-৬ উইকেট পড়ে গেছে, তখন আপনার গেমপ্ল্যান কী ছিল? সানি বলেন, রান না দেয়ার তার লক্ষ্য ছিল, আমি সবসময়ই যে ব্যাপারটা চেষ্টা করি, সেটা হচ্ছে রান না দেয়া। উইকেট হয়তো আমার দিক থেকে না পড়লেও অন্যদিক থেকে ঠিকই পড়বে। কিন্তু আমার ফোকাস থাকে যে যত কম রান দেয়া যায়। আপনার বোলিং এ্যাকশনও পরিবর্তন হয়েছে। নতুন এ্যাকশনের সাথে কতোটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন? স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন বলে জানান সানি, শেষ দুইটা ম্যাচ বল করে নিজের কাছেই কমফোর্টেবল মনে হচ্ছে। দুশ্চিন্তায় ছিলাম যে অনেকদিন পর নতুন এ্যাকশনে বল করব, তাও আবার টি২০ ফরমেটে। কিন্তু দুইটা ম্যাচ তো বেশ ভালই বল করলাম। প্রথম ম্যাচে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ ওভার বল করে ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। দ্বিতীয় ম্যাচেতো কোন রান না দিয়েই নেন ৩ উইকেট। সানির এমন রেকর্ডের দিনে একটি ঘটনাও ঘটল। মাঠে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হলো না। নিরাপত্তা রক্ষীরা আটকে দিল সাংবাদিকদের। আর তাই ম্যাচের পরের সংবাদ সম্মেলনও হলো না। তবে প্রেসবক্সে চলে আসলেন সানি। প্রেসবক্সেই সাংবাদিকদের সঙ্গে তার কথা হলো। সানি এ নিয়ে জানালেন, মূল ব্যাপার হচ্ছে যেহেতু আমার প্রেস কনফারেন্সে আসতেই হবে, তো যেখানেই হোক, আমার তো কথা বলতেই হবে। এটা নিয়ে তেমন কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। উইকেট থেকে কি কোন সহযোগিতা পাচ্ছিলেন? বল বেশ টার্ন করছিল, মাঝে মাঝে নিচুও হচ্ছিল। সানি বললেন খুলনার ব্যাটসম্যানরাই ব্যর্থ হয়েছে, না, আমার সেটা মনে হয় না। সত্যি বলতে, ওরাই ভুল করেছে। আমাদের বোলারদের প্ল্যান ছিল যে আমরা রাইট এরিয়াতে বল করব। ওরা বাজে শট খেলে আউট হয়েছে। বল স্কিড করলেও দুই-একটা ছাড়া খুব বেশি টার্নও করেনি। বল নিচু হচ্ছিল খুব, সেটাও বলব না। দুই-একটা বল আমাদের এই উইকেটে সবসময়ই নিচু হয়। আমার মনে হয়, ওরাই ভুল করেছে। রংপুরও টানা ২ ম্যাচে জয় পেয়ে যায়। অথচ শুরুতে দলটিকে শক্তিশালী মনে হয়নি। সানি এটাও জানিয়ে দিলেন, রংপুরের কিন্তু বড় শক্তি স্পিন। দুইটা ম্যাচ খেলার পর কি মনে হচ্ছে যে স্পিনটাই রংপুরের সবচেয়ে বড় শক্তি? প্রশ্নটা হতেই সানি বলে দিলেন, এখন পর্যন্ত সেটাই মনে হচ্ছে। কারণ আমাদের দলে পেস বোলার খুবই কম। গত বছরও আমাদের দলে চারজন স্পিনার ছিল। এ স্পিন সানিরও শক্তি। সেই শক্তি দিয়ে এখন সামনের ম্যাচগুলো সানি কতটা কি করতে পারেন, সেটিই দেখার বিষয়।
×