ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নাসিরনগরে হামলা

ঢাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৯ নভেম্বর ২০১৬

ঢাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ, মন্দির-বাড়িঘরে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর এবং লুটপাটের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতি এ দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আকতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া, সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক অসীম সরকার, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়া রহমান, সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস প্রমুখ। অধ্যাপক আকতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ চিরকাল একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমনে শুধু দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে না, বৈদেশিক রাজনীতিরও সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর নির্মাণের পাশিপাশি মন্দির নির্মাণের ব্যবস্থা করে তাহলে বাংলাদেশ যে একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র তা আরও একবার প্রমাণ হবে। এ সময় তিনি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের মন্দির ও ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বহির্বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে তখন একটি গ্রুপ দেশের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সুযোগ তাদের দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এখন থেকে আমরা আর প্রতিবাদ করব না প্রতিরোধ করব। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের স্যেশাল ট্রাইব্যুনাল করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার করার জন্য তিনি সরকারের কাছে আহ্বান করেন। অসীম সরকার বলেন, আমরা সংখ্যালঘু না আমরাও এ দেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি, এদেশের উন্নয়নে অবদান রেখেছি তাহলে কেন আমরা সংখ্যালঘু হব। আমরা ভীত সন্ত্রস্ত, আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না, কোন অপরিচিত লোকের সঙ্গে দেখা করতে ভয় পাই। আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি, এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র বানানোর যে চেষ্টা তারই অংশ হিসেবে হিন্দুদের, বৌদ্ধদের, আধিবাসীদের উপর আক্রমণ, মন্দির-বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র মানে এখানে কেবল মুসলমান থাকবে। ভিন্ন মনের, ভিন্ন চিন্তার, অন্য ধর্মের মানুষ এখানে থাকতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশ একটি বহুত্ত্ববাদী রাষ্ট্র যেখানে বহু জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষ বাস করে। এ সময় তিনি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা মোকাবেলা করার জন্য সকলকে আহ্বান করেন।
×