নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৩০ অক্টোবর ॥ বাউফল পৌর শহরের বাজার রোড এলাকায় প্রায় ২কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১১ শতাংশ সরকারী জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন জাহাঙ্গীর হোসেন নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী। ওই জমিতে তিনি ৬তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, দখল করা ওই জমির চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে সেখানে পাইল করার জন্য আনা হয়েছে যন্ত্রপাতি, রড, সিমেন্ট, বালিসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী। কাজ দেখভাল করার জন্য সেখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে একজন প্রকৌশলীকে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাউফল পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে বাউফল মৌজায় সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ১০৬৬ দাগের ৭শতাংশ জমি যা প্রত্যহ দৈনন্দিন বাজারের জন্য নির্ধারিত, ১০৫৪নং দাগের এক শতাংশ জমি জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য নির্ধারিত, এছাড়াও খাল ভরাট করে চার শতাংশ জমি এবং দেড় শতাংশ অর্পিত সম্পতি (“ক” তফসিলভুক্ত) দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের যাবতীয় কাজ চূড়ান্ত করেছেন তিনি। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী হাট বাজার, খরস্রোতা খাল এবং জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সরকারী হালট এবং অর্পিত সম্পত্তি বন্দোবস্ত কিংবা ডি সি আর দেয়ার কোন আইনগত বিধান না থাকলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০০৯-১০ সালে পার্ট টু বাউ নামজারি কেসের মাধ্যমে উক্ত সম্পত্তি নিজ নামে রেকর্ড সংশোধন করেছেন মর্মে ৫১৬ এবং ৫৪৩ নামে দুইটি খতিয়ান খুলেন। কিন্তু রেকর্ড সংশোধনের পৃষ্ঠায় দেখা যায়, সেখানে সহকারী কমিশানার (ভূমি) এর কোন স্বাক্ষর নেই। এছাড়াও খালের মধ্যে ১৪২২/১ নামে অপর একটি নতুন দাগ ম্যাপে সৃষ্টি করে ২ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেন।
কিন্তু ওই ম্যাপে অঙ্কিত ওই দাগের (১৪২২/১) কোন অনুমোদন নেই। এমনকি সেখানেও নেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর স্বাক্ষর। সম্পূর্ণ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি সরকারী বাজার, খাল এবং হালটের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বাউফল বাজারের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেনের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সরকারী সম্পত্তি দখলের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। আমি কবলা সূত্রে এই জমির মালিক। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর দায়িত্বে থাকা বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই জায়গায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: