ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হিলারি হেরেও যেতে পারেন যদি

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

হিলারি হেরেও যেতে পারেন যদি

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে পারেন যদি লিবার্টারিয়ান ও গ্রীন পার্টির প্রার্থীরা তাকে সহায়তা করেন। এমন একটা সম্ভাবনা, তা যত ক্ষীণই হোক না কেন, তুলে ধরা হয়েছে ‘দি ইকোনমিস্ট’ পত্রিকার এক নিবন্ধে। তাতে এ ধারণা ব্যক্ত করা হয়েছে যে, এবারের নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে তৃতীয় দলগুলোর একটা ভূমিকা থাকতেও পারে। তৃতীয় দল বা ছোটখাটো দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো লিবার্টারিয়ান পার্টি ও গ্রীন পার্টি। প্রথমটির প্রার্থী গ্যারি জনসন এবং দ্বিতীয়টির জিল স্টেইন। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জয়-পরাজয় নির্ধারণে এদের কোন ভূমিকাই থাকার কথা নয়। কিন্তু এবারের নির্বাচনের চরিত্রই আলাদা। এবার প্রধান দুই দলের প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে এমন অপছন্দের যে আগে আর কখনও এমনটি দেখা যায়নি। এ অবস্থায় অনেক আমেরিকান ভোটার মরিয়া হয়ে বিকল্প প্রার্থীদের সন্ধান করছেন। বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা দুই প্রধান প্রার্থীকে বর্জন করার কথা ভাবছেন। সাম্প্রতিক জরিপে এমনও দেখা গেছে যে, তাদের এক-চতুর্থাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশ হয় লিবার্টারিয়ান প্রার্থী গ্যারি জনসনকে, নয়ত গ্রীন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনকে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। আর এখানেই রয়েছে যত বড় বিপদ এবং সেই বিপদটা হিলারির জন্য; এই তৃতীয় দলের প্রার্থীদের ভোট মিলে যে তারা জয়ী হবেন তার কোনই সম্ভাবনা নেই। তবে সেই ভোট হবে হিলারির জন্য নেতিবাচক ভোট এবং সেটা ট্রাম্পের পক্ষে যাবে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামাও এমন সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। আর সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স তো একই ধরনের মন্তব্য একবার নয়, বারবার করেছেন। তিনি এ ধরনের প্রতিবাদসূচক ভোট না দেয়ার জন্য আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাদের মনে রাখতে হবে যে হয় হিলারি, না হয় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবেন। বিষয়টিকে আরেকটু খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এ মুহূর্তে জনমত জরিপ যা বলছে তাতে জনসন ও স্টেইনের পক্ষে ১০ শতাংশ ভোট পড়বে। তার মধ্যে জনসনের পক্ষেই পড়বে সাড়ে ৭ শতাংশ ভোট। এই প্রতিবাদসূচক ভোট হিলারি ও ট্রাম্প উভয়ের ভোট কেড়ে নেবে। এতে হিলারি যতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ট্রাম্পও ততটাই হবেন। কিন্তু ভার্জিনিয়া ও কলোরাডোর মতো কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান রাজ্যে হিলারি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ধূলিসাত হয়ে যেতে পারে। স্বাভাবিক বছর হালে জনসন ও স্টেইনের পক্ষে এমন জনমত জরিপে যে ১০ শতাংশ ভোটার পাওয়া যাচ্ছে সেটা নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে ততই তা কমতে কমতে একেবারে নেমে যাওয়ার কথা। ২০১২ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামা ও মিট রমনির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে এই জনসন ও স্টেইনই একত্রে মোট ভোটের দেড় শতাংশেরও কম পেয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প ও হিলারি দুজনকেই আমেরিকানদের খুব অপছন্দ। প্রথমজন একটা প্রধান দলের সবচেয়ে অজনপ্রিয় এবং দ্বিতীয়জন দ্বিতীয় সর্বাধিক অজনপ্রিয় প্রার্থী। আমেরিকান ইতিহাসে এমনটি আর কখনও দেখা যায়নি। এ কারণেই আগের হিসাবটা এক্ষেত্রে না-ও ঘটতে পারে। হিলারি যদিও ট্রাম্পের তুলনায় ৭ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন; তথাপি এই দুজনের মধ্যে লড়াইটা হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এ অবস্থায় তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীদের ভোট ট্রাম্পকে জয়ী করতে সহায়ক হতে পারে। ২০০০ সালের নির্বাচনে গ্রীন পার্টির প্রার্থী র‌্যালফ নাদের ফ্লোরিডায় যে ৯৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন সেটাই সম্ভবত আল গোরের পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গ্রীন পার্টির ড. স্টেইন ডেমোক্রেটদের ভোট কাড়বেন তাতে সন্দেহ নেই। তিনি ৭শ’ সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়ার পক্ষপাতী। তিনি চান আমেরিকা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর চলুক। অন্যদিকে জনসন সামাজিক দিক দিয়ে উদারপন্থী হলেও আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে রক্ষণশীল এবং চিকিৎসা খাতে সরকারী ব্যয় বহুলাংশে কমিয়ে দেয়ার পক্ষপাতী। তথাপি তিনি ডানপন্থী ও বামপন্থী উভয় দিকের ভোটারদের যেভাবে টানছেন তা বিস্ময়কর। চলমান ডেস্ক সূত্র : দি ইকোনমিস্ট
×