ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কর্মীদের প্রতি নির্দেশ

ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী ॥ তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য-

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী ॥ তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়  আসার জন্য-

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় রক্ষায় দলকে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার চালাতে দলীয় নেতাকর্মীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। সামনে নির্বাচন। জনগণের কাছে যেতে হবে। তৃতীয় দফা নির্বাচিত হতে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে উন্নয়নের কথা বলতে হবে। তাদের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। যেন তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে পারি। এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আমার বাবা, মা, ভাইরা জীবন দিয়ে গেছে, তাই জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য বাবার মতো আমিও যে কোন আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত। রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনের সূচনা এবং সমাপনী বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বার বার সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব খুঁজে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ৩৫ বছর দলীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। আপনারা (কাউন্সিলর) আমাকে যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছিলেন তা আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। আপনারা আমাকে অনেক সম্মান দিয়েছেন। এই সম্মান থাকতে থাকতে আমি বিদায় নিতে চাই। জীবিত থাকতেই নতুন নেতৃত্বের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি চাই, দলকে এগিয়ে নিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হোক। আমি বেঁচে থাকতে নতুন নেতা বেছে নেবেন সেটাই আমি চাই। সভাপতি পদে না থাকলেও আমি আওয়ামী লীগেই থাকব। আমি তো আওয়ামী পরিবারেরই সদস্য। তাই নতুন নেতা আনুন, দল আরও শক্তিশালী হোক। তবে তার এ প্রস্তাবে সাড়া দেননি সাড়ে ছয় সহস্রাধিক কাউন্সিলর। সমস্বরে ‘না না’ বলে তার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে আমৃত্যু শেখ হাসিনাকে সভাপতি পদে রাখার দৃপ্ত ঘোষণা করেন তারা। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দুই দফায় আট বছর ক্ষমতায় রয়েছে। এত উন্নয়ন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ করতে পারেনি। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। তৃতীয় দফায় নির্বাচনে জয়ী হতে নেতাকর্মীদের জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে তাদের কল্যাণে আমরা কী করেছি, সেটাই তুলে ধরতে হবে। ব্যাপকভাকে সরকারের বিশাল উন্নয়ন ও সফলতাগুলো প্রচার করতে হবে। ঘরে ঘরে সরকারের উন্নয়নের কথা পৌঁছে দিতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, তাদের জন্য আমরা কী কী করেছি। বলতে হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সময় সেখানে উপস্থিত সারাদেশের কাউন্সিলররা মুহুর্মুহূ করতালি ও সেøাগান দিয়ে স্বাগত জানান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে তালি বাজালে হবে না। জনগণের কাছে যেতে হবে। উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে আওয়ামী লীগকেই আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে সঠিক টাইমে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সারাদেশের কাউন্সিলরা তুমুল করতালি ও স্লোগানে স্বাগত জানান তাকে। এরপর শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের শেষদিনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। সারাদেশের ছয় হাজার ৫৭০ কাউন্সিলর ছাড়াও দলের উপদেষ্টা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও জাতীয় কমিটির নেতা এবং মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও এমপিরা এই কাউন্সিলে যোগ দেন। শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর সারাদেশ থেকে আসা কাউন্সিলরদের মধ্যে দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার ৪১ সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখেন। অধিবেশন চলাকালে বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় কাউন্সিলস্থলে পৌঁছলে কাউন্সিলররা তাকেও তুমুল করতালি ও স্লোগানে স্বাগত জানান। পরে জোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় দফায় কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হলে সেখানে আরও কয়েক জেলা নেতা বক্তব্য দেন। এরপর দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র এবং বাজেট অনুমোদনের পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে শুরু হয়। সোয়া পাঁচটায় নতুন নির্বাচনের পর পুনর্নির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনা দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। কাউন্সিল অধিবেশনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় এই কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুই ঘণ্টা আগে থেকেই সারাদেশের কাউন্সিলরা কাউন্সিলস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। তারা দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলস্থলে প্রবেশ করেন। এ সময় সম্মেলন উপলক্ষে আসা সারাদেশের ডেলিগেটস ও নেতাকর্মী কাউন্সিলস্থলের বাইরে অবস্থান নেন। আগের দিনের সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরেও ছিল হাজার হাজার নেতাকর্মীর ভিড়। তারা সকাল থেকেই স্লোগানে স্লোগানে মুখর রাখেন গোটা এলাকা। এতে সেখানে শনিবার সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের মতোই উৎসব ও আনন্দমুখর পরিবেশের সূচনা ঘটে। বিএনপি-জামায়াত জোটের দুর্নীতি-লুটপাট-দুঃশাসন এবং মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিবরণ তুলে ধরে আগামীতে যেন তারা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, মানিলন্ডারিং করে, যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয় তারা যেন আর কোনদিনই ক্ষমতায় আসতে না পারে। এরা ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসবে, খুনীরা ক্ষমতায় আসবে। এরা ক্ষমতায় গিয়ে যে দুর্নীতি-লুটপাট করেছে, মানুষ খুন ও সন্ত্রাস করেছে সেটাও মনে রাখতে হবে। জনগণের কাছে গিয়ে এগুলোও বলতে হবে। উদ্বোধনী ও সমাপনী আবেগঘন বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে টানা ৩৫ বছর দলীয় সভাপতির দায়িত্ব পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি চাই, দলকে এগিয়ে নিতে আপনারা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। বেঁচে থাকতে থাকতে নতুন নেতা নির্বাচন করে দলকে শক্তিশালী করে যাব। এ সময় কাউন্সিলের চিত্রই পাল্টে যায়। মিলনায়তনে উপস্থিত সব কাউন্সিলর দাঁড়িয়ে সমস্বরে ‘না, না’ বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা শেখ হাসিনারই দলীয় সভাপতি পদে থাকার পক্ষে স্লোগান শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগপ্রধান বলেন, আমার বয়স ৭০ (সত্তর) বছর হয়ে গেছে। এ কথাও মনে রাখতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর সেখানে স্লোগানের মাত্রা আরও বাড়ে। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগই আমার পরিবার, আমার আপনজন। আওয়ামী লীগকে আমি যত সময় দিয়েছি ততটা আমার সন্তানদেরও দেইনি। আমি যখন দলীয় সভানেত্রী নির্বাচিত হই তখন আমার ছেলে জয়ের বয়স ১০। মেয়ে পুতুলের বয়স আট। আমার বাচ্চাদের ¯েœহ থেকে বঞ্চিত করে আমি নেতাকর্মীকে সময় দিয়েছি। আমি যেখানেই থাকি, যেভাবেই থাকি- আওয়ামী লীগের বাইরে থাকব না। আওয়ামী লীগেই থাকব। কিন্তু আপনাদের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করে দলকে এগিয়ে নিতে হবে। আমি চাই, দল শক্তিশালী হোক। আন্তর্জাতিকভাবে যে সম্মান আমরা অর্জন করেছি, তা এগিয়ে যাক। জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বাবা-মা-ভাইসহ সবাইকে হারিয়ে রিক্ত-নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এসেছিলাম দেশের মানুষের কল্যাণের প্রতিজ্ঞায়। আপনারা আমার ওপর যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছিলেন তা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। আমি যখন এসে দলের হাল ধরেছিলাম তখন আওয়ামী লীগ ব্র্যাকেটবন্দী ছিল। সেই অবস্থা থেকে তৃণমূল থেকে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছি, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রাচীন এই দলটি সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের যে উন্নয়ন হয় তাও আমরা প্রমাণ করেছি। আপনারা ও দেশের মানুষ আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, সেই সম্মান থাকতে থাকতে আমি বিদায় নিতে চাই। ৩৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালনে কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে সেজন্য কাউন্সিলরদের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দীর্ঘ সময় সভাপতির দায়িত্ব পালনে চলার পথে কোন ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে, কারোর মনে ব্যথা দিয়ে থাকলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। সবাইকে হারিয়ে আমি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর মধ্যেই আমার হারানো বাবা-মা ও ভাইদের খুঁজে পেয়েছি। তাদের যে স্নেহ-ভালবাসা পেয়েছি তা কোনদিন ভুলতে পারব না। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার ওপর বার বার আঘাত হানা হয়েছে। ২১ আগস্টসহ বহুবার নেতাকর্মীরাই মানবঢাল রচনা করে আমাকে প্রাণে রক্ষা করেছেন। এ অবদান কোনদিনই ভুলবার নয়। দলের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিদেশী অতিথিদের বক্তব্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারে না। আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আসা বিদেশী অতিথিরাও জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান যে স্লোগান নিষিদ্ধ করেছিলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ যে স্লোগান দিত না, সেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বেও মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতিনিধিরাও আওয়ামী লীগকে সম্মানের চোখে দেখছেন। এটি ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রমাণ করতে বলেছিলাম। তারা প্রমাণ করতে পারেনি। নিজেদের অর্থেই আমরা পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি। যারা এই অভিযোগ করেছিল, তারাও বুঝতে পেরেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র ও খেলা যাবে না। যেটি সামরিক স্বৈরশাসকরা থাকলে করা যায়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পথ চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের আদর্শ ধরে রেখে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিজে কী পেলাম, সেটি বড় কথা নয়। দেশ ও জাতিকে কী দিতে পারলাম- সেটিই বড় কথা। টাকা-পয়সা ও সম্পদ কিছুই থাকে না। বরং বেশি সম্পদ হলে অশান্তি হয়, ছেলেমেয়েদের মধ্যে তা নিয়ে মারামারি হতে পারে। এ প্রসঙ্গে তার পরিবারের সবাই সৎভাবে জীবনযাপন করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ও আমার বোন শেখ রেহানা ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছি। ছেলেমেয়েদের একটি কথাই বলেছি, তোমাদের জন্য কোন সম্পদ রেখে যেতে পারব না। কিন্তু লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে যাব, সেটিই হবে তোমাদের সম্পদ। তাদের বলেছি, তোমরা বঙ্গবন্ধুর নাতি। তাঁর মতো ত্যাগ ও আদর্শ নিয়েই নিজেদের মানুষ হতে হবে। ছেলেমেয়েরা নিজেরাই কষ্ট করে, চাকরিবাকরি করে লেখাপড়া শিখেছে। তাদের পেটে বিদ্যা আছে। তারা কিছু করে খেতে পারবে।’ দেশ ও জাতির কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করা- এর সবকিছুই একমাত্র আওয়ামী লীগই করেছে। আর কেউ এটি করতে পারেনি। পারবে কী করে? যারা ‘উড়ে এসে জুড়ে বসে’ সেই স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের দিয়ে দেশের কোন উন্নয়ন হয় না। যারা হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি-লুটপাট করেছে, মানুষের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে তাদের দিয়ে মানুষের কল্যাণও হবে না। তারা কেবল মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে, কোন উন্নয়ন করবে না। এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর দায়িত্ব আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী পুনর্বার দেশের সকল জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতাকর্মীদের সারাদেশে স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে নিঃস্ব-রিক্ত-গৃহহারা মানুষের তালিকা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাই স্ব স্ব এলাকায় নিঃস্ব-রিক্ত ও হতদরিদ্রদের খুঁজে বের করুন, আমরা তাদের ঘরবাড়ি বানিয়ে দেব। দেশের একটা মানুষ গৃহহারা থাকবে না, একজন মানুষও নিঃস্ব থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলব। দারিদ্র্যকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসব। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই- কেউই তা রুখতে পারবে না। নবর্নির্বাচিত সভাপতি শেখ হাসিনা আগামীদিনের পথ চলায় দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন।
×