ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হেমায়েতউদ্দিন বীরবিক্রম আর নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

হেমায়েতউদ্দিন বীরবিক্রম আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হেমায়েত উদ্দিন বীরবিক্রম (৭৮) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। শনিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হেমায়েত উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার টুপুরিয়া গ্রামে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হেমায়েত উদ্দিন বীরবিক্রমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তাঁর বড় ছেলে হাসেম উদ্দিন। তিনি জানান, তাঁর বাবা হৃদরোগে ভুগছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে তিনি মারা যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে ‘হেমায়েত বাহিনী’ কোটালীপাড়াসহ ওই অঞ্চলে একাধিক যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করে। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার তাকে বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত করে। একই অবদানের জন্য তাঁর নামে কোটালীপাড়ার টুপুরিয়া গ্রামে ‘হেমায়েত বাহিনীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ করা হয়। ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ স্মৃতি জাদুঘরের উদ্বোধন করেন। আগামী সোমবার টুপুরিয়া গ্রামে জানাজা শেষে এই জাদুঘরের সামনে তাঁর লাশ দাফন করা হবে। তিনি স্ত্রী, ১১ ছেলে, ২ মেয়ে ও বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। জানা গেছে, হেমায়েত উদ্দিন পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি গাজীপুর সেনানিবাস থেকে অস্ত্রসহ পালিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিরামেরকান্দি গ্রামে চলে আসেন। সেখানে হেমায়েত বাহিনী গঠন করে কোটালীপাড়ার জহরেরকান্দিতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করেন। হেমায়েত বাহিনী ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলে পাকবাহিনীর সঙ্গে একাধিক যুদ্ধে অংশ নেয়। হেমায়েত উদ্দিন রামশীলের যুদ্ধে মারাত্মক আহত হন। তার মৃত্যুতে গোপালগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সমাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও শ্রমজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হেমায়েত উদ্দিনের অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর সাহসী ভূমিকা জাতি সব সময় স্মরণ করবে’। প্রধানমন্ত্রী তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
×